উখিয়া নিউজ ডটকম::
উখিয়ায় বন ধ্বংসের নেপথ্যে রয়েছে ২৫ অবৈধ করাত কল। বনভূমি সংরক্ষণ ও বন সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করলেও নির্বিচারে পাহাড় কাটা, বনভূমি জবর দখল পূর্বক অবৈধ স্থাপনা নির্মানসহ নানামুখি অপতৎপরতার কারণে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
উখিয়ার পাঁচটি ইউনিয়নে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত ২৫টি করাত কলে সামাজিক বনায়ন ও প্রাকৃতিক বনের গাছ অবৈধভাবে চেরাই করে নিত্যপণ্যের মত খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। পাচার হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়রা কক্সবাজার বনবিভাগীয় কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, উখিয়া বন রেঞ্জের আওতাধীন উখিয়ার ঘাট বালুখালী বনবিটে ২০০৫-০৬, ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ অর্থ বছরে সৃজিত বনবাগানের প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সামাজিক বনায়নের মূল্যবান গাছ কেটে চেরাই করে টেকনাফে পাচার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, বনরক্ষা পাহারাদার সমিতির সভাপতি বালুখালী গ্রামের বাদশা মিয়া জানান, বালুখালী পান বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে একটি বসতভিটায় বসানো অবৈধ করাতকল নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় পাঁচ জন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাদের ছত্রছায়ায় এলাকার সামাজিক বনায়নের মূল্যবান বন সম্পদ লুটপাট করা হচ্ছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বালুখালী বনবিট কর্মকর্তা মোবারক আলী জানান, সামাজিক বনায়নের গাছ রক্ষা করতে যাওয়ায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় ওই বনবিট কর্মকর্তা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
উখিয়া বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, উখিয়ার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রায় ২৫টি করাত কলে দিনরাত অবিরাম চোরাই কাঠ চেরাই করা হচ্ছে। এসব অবৈধ করাতকলগুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে তৎকালীন বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম হোসেন উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় একটি প্রতিবেদন দাখিল করলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে সংঘবদ্ধ এসব করাতকল ব্যবসায়ী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিন দিন বাড়ছে অবৈধ করাত কলের সংখ্যা। সামাজিক বনায়নের অস্থিত্ব টিকিয়ে রেখে বন সম্পদ উন্নয়নে অবৈধ করাত কল উচ্ছেদের ব্যাপারে উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, অবৈধ করাত কল উদ্ধারের ব্যাপারে তারা বার বার অভিযান চালাচ্ছে।
স্থানীয় পরিবেশবাদী সচেতন মহলের অভিযোগ, অবৈধ করাত কল থেকে স্থানীয় বন বিভাগ মাসিক মাসোহারা পেয়ে থাকেন। যে কারণে তারা করাত কল উদ্ধারে তত উৎসাহী নয়। সামাজিক বনায়নের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে, ওই বন রেঞ্জ কর্মকর্তা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।