হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া ::
বদলে গেছে সময়। আগেকার সময়ের মা বোনেরা ডিভোর্স কি জানতো না। স্বামীর প্রতি তাদের ছিল শ্রদ্ধাবোধ। এখন আধুনিকতার ছোয়ায় তুচ্ছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ-নানা কারণে ভাংছে সংসার। বাড়ছে ডিভোর্সের সংখ্যা।আর ডিভোর্সের ক্ষেত্রে এখন এগিয়ে মেয়েরা। এজন্য নারীর অভাধ বিচরণ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতাসহ ক্যারিয়ার,ব্যাক্তি স্বাতন্ত্রাবোধকেই মূল কারণ বলে মনে করছেন সমাজের সচেতন মহল। আবার দীর্ঘদিনের সম্পর্কটিকে অত্যন্ত পুরনো মনে হচ্ছে নারী-পুরুষ উভয়ের কাছেই। যার কারণে বিয়েবর্হিভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন অনেকে। সুমন ও সানজিদার (ছদ্মনাম) ঘটনাটি এমনই। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তারা। কিন্তু বিয়ের পরই সংসারে দেখা দেয় অশান্তি।বিরোধের সূত্রপাত গর্ভের সন্তান নিয়ে। সন্দেহ বাড়তে থাকে দিনকে দিন। একপর্যায়ে একদিন সুমন রাগের মাথায় সানজিদাকে থাপ্পড় দেয়। এ নিয়ে শুরু হয় দ্বন্ধ। শাশুড়ীর সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয় সানজিদার। সুমনের আচরণ ভাল লাগেনি সানজিদার মায়ের। তখন থেকেই মেয়ে সানজিদাকে উদ্ভুদ্ধ করেন স্বামীকে ডিভোর্স দিতে। সানজিদার মা ভাবেন তার মেয়ে বিএ পড়ছে, কত উজ্জল ভবিষ্যৎ তার। শুধু শুধু বিয়ে নামে সম্পর্কের জালে আটকে থাকার প্রয়োজন কি। আর তাই সুমনের পরিবারের কোন অনুরোধই শুনেননি মা মেয়ে উভয়েই। সুমন অনেক চেষ্টা করেও মন গলাতে পারেননি সানজিদার। অবশেষে একদিন সুমনের কাছে ডিভোর্সের কাগজ এসে পৌঁছে।পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে পরিচয় হয় শাহিনা নামের একটি মেয়ের। শাহিনা উখিয়ার মেয়ে। বিউটি পার্লারে কাজ শেখার জন্য ছিলেন কক্সবাজারে। এখন কোটবাজারের একটি পার্লারে কাজ করেন। এসুবাদে আরিফ নামের এক ছেলের সাথে এক বছর আগে ফোনে পরিচয় হয় শাহিনার।মিষ্টিকণ্ঠী এ মেয়েটিকে বার বার ফোন দিতে থাকে আরিফ। আরিফ একটি দোকানে কাজ করে। অজানা অচেনা এ ছেলেটির সঙ্গে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হতো শাহিনার। আরিফ খুব সহজেই শাহিনার সরল মনে দাগ কাটে। এক পর্যায়ে অচেনা ছেলেটির সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়ে যায় শাহিনা। আরিফ সহজ সরল মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে কক্সবাজার আবাসিক হোটেলে রাত কাটায়। এভাবে ধীরে ধীরে তাদের মাঝে বাড়তে থাকে হ্নদ্যতা। এরপর আরিফের পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হলে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। আরিফ তার এক বন্ধুর সহায়তায় চট্রগ্রামের একটি দোকানে চাকরি পায়। আরিফ কিছুদিন পর পর বাসায় আসতেন। ভালোই যাচ্ছিল তাদের বৈবাহিক জীবন। কিন্তু বছর ঘুরতেই শাহিনার চোখে পড়ে আরিফের উদাসীন ভাব। ফোন দিলে কথা বলে না। শাহিনা চট্রগ্রামে আসতে চাইলে আরিফ রাজি হয় না। একদিন শাহিনা স্বামীকে সারপ্রাইজ দিতে কোনকিছু না জানিয়েই চট্রগ্রামে চলে আসে। আসার পর নিজেই সারপ্রাইজ হয়ে যান। স্টেশন থেকে সরাসরি চলে যান আরিফের বাসায়। সেখানে যাওয়ার পর এক ভদ্র মহিলা বাসার দরজা খুলে দেন। শাহিনা প্রথমে ভাবেন হয়তো তিনি ভুল ঠিকানায় চলে এসেছেন। আর তাই ঠিকানাটা বারবার মিলিয়ে দেখেন। না ঠিকানা তার ঠিকই আছে। আরিফের নাম বলতেই ভদ্র মহিলা জানান, তিনি আরিফের স্ত্রী। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ হয়ে যান শাহিনা। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় আরিফকেও বাসায় পেয়ে যান। তারপর একে একে জানতে পারেন সবকিছু। আরিফের দ্বিতীয় স্ত্রী তার এক বন্ধুর বোন। বন্ধুত্বের সুবাদে বন্ধুর বোনের সাথে মন দেয়া নেয়ার সম্পর্ক। এক পর্যায়ে এ সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। আরিফের দ্বিতীয় স্ত্রী সায়মারও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার দুই সন্তান ও স্বামীকে রেখে তিনি আরিফকে বিয়ে করেছেন। কথাগুলো জানার পর অনেক কষ্ট হতে থাকে সানজিদার। সে তার মা বাবাকে জানায় বিষয়টি। তারপর পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় ডিভোর্সের। সমাজের সচেতন লোকজন মনে করেন,বিদেশি সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ ও চর্চা করতে গিয়ে মানুষের জীবন দিন দিন হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত। তাই পরবর্তীতে তারা ডিভোর্স নামক কঠিন সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছেন।
কুমিল্লা থেকে ঢাকা ফেরার পথে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফের দুর্ঘটনার শিকার হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়ি। বৃহস্পতিবার (২৮ ...
পাঠকের মতামত