হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৪/০৮/২০২২ ৮:১৩ পিএম , আপডেট: ১৫/০৮/২০২২ ৮:২৫ পিএম

ভোগ্যপণ্যের বাজারে গেলে নেই স্বস্তি। এমন কোন পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। চড়া পণ্যমূল্যে আঁতকে উঠছেন সাধারণ মানুষ। দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম। জ্বালানি তেল। ভোজ্য তেলের বাজারে কারসাজি। বিশ্ব বাজারে কমছে গমের দাম তবুও দেশের বাজারে বাড়ছে আটা-ময়দার দাম। চালের বাজারে অস্থিরতা। মাছ-মাংসের বাজারে আগুন। শাক-সবজির দামও বেড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির চাপও সবার আগে এসেছে সাধারণ মানুষের ওপরে। পোষাক-আশাক, খাদ্যবহির্ভূত পণ্য থেকে শুরু করে চিকিৎসা ব্যয় কোন দিকে বাড়েনি মূল্য। আর এসব কিছুর দাম বৃদ্ধির চাপ সবার আগে পড়ে দেশের মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের ওপরে।চারিদিকে চাপে একেবারে চিড়েচ্যাপ্টা স্বল্প আয়ের মানুষের। দিন মজুর আব্দুস সালাম বলেন, আগে প্রতিদিন কাজ পেতাম। কোন দিন কাজ না পেলে বন থেকে কাট্ এনে বাজারে বিক্রি করতাম। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে বন উজাড় হয়ে গেছে। রোহিঙ্গারা শ্রমবাজার দখল করে রেখেছে। কৃষি কাজেও কম দামে রোহিঙ্গা শ্রমিক পাওয়ায় এখন আর সেরকম কাজ আমরা পায় না। আমাদের চলতে খুব কষ্ট হয়। গরিবের কষ্ট কেউ দেখে না। মধ্য্যবিত্তরা নিরবে কান্না করছেন। সংসার সামলাতে গিয়ে ধার-কর্য করে চালিয়ে নিচ্ছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তাব্যক্তি শফিকুর রহমান। থাকেন মালভিটা এলাকায়। ৩০ হাজার টাকার বেতনে চাকরি করেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি এনজিও সংস্থায়। স্বামী-স্ত্রী চার সন্তান ও বৃদ্ধ মাসহ তাদের সাত জনের সংসার চলে এই আয়ে। কিন্তু সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আর কুলাচ্ছে না চাকরির বেতনের টাকায়। তাই বাধ্য হয়ে সারাদিন ক্যাম্পে কাজ শেষ করে রাতে একটি টিউশনি করতে হচ্ছে তাকে। টিউশনির কথা স্ত্রী জানেন না। কক্সবাজার শহরের চেয়ে এখানে উখিয়াতে বাসা ভাড়া অনেক বেশি। বারো থেকে পনেরো হাজার টাকার নিচে ভালো বাসা ভাড়া পাওয়া মুসকিল। শফিকুর রহমান বলেন, যে বেতন পাই তা দিয়ে ঘরভাড়া ও চার সন্তানের লেখাপড়ার খরচ দিয়ে তেমন কিছু থাকে না। টেনেটুনে, ধার-দেনা করে সংসারের খরচ মেটাতে হয়। কিন্তু আর কুলাতে পারছি না। এক মাস আগে আম্মা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারিনি। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারকে দেখিয়েছিলাম, তিনি বলেছেন পেটে টিউমার আছে, অপারেশন করাতে হবে। ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা লাগবে। টাকার অভাবে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। আপাতত ওষুধ খেয়ে দাবিয়ে রাখা হচ্ছে। সংসারের খরচই মেটাতে পারছি না, এখন ১ লাখ টাকা কোথায় পাব। তিনি বলেন, এই অবস্থার মধ্যে কয়েক মাস ধরেই চিন্তা করছিলাম। চাকরির পাশাপাশি বাড়তি কোনো কাজ করা যায় কিনা। ৮-৯ ঘন্টা অফিসে সময় দেওয়ার পর অন্য আরেকটি চাকরি করার মতো সময় থাকে না। তাই অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম অফিসের পর রাতে কিছু একটা করার। সংসারের ব্যয় মেঠাতে রাতে একটি বাসায় টিউশনি করি। তিনজন ছাত্রকে পড়াই। তিন হাজার টাকা মাস শেষে দেয়। তা দিয়ে টুকটাক বাজার খরচ হচ্ছে। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন এখন অনেক কঠিন হয়ে গেছে।

পাঠকের মতামত

রামুতে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

কক্সবাজারের রামুতে আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা ‘ডাকভাঙ্গা বাংলাদেশ’ এর শিক্ষা প্রকল্পের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ও প্রকল্প সমন্বয়কারির ...

উখিয়ায় বনবিভাগের পাহাড় কেটে তৈরি করছে বসতভিটা

কক্সবাজারের দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের ওয়ালাপালং বিটে রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তরপুকুরিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় বনবিভাগের সহযোগিতায় ...

বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাস-পিকাআপের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পিকাআপ চালক ও হেলপার রয়েছেন। মঙ্গলবার ...