উখিয়া নিউজ ডটকম::
[caption id="attachment_26974" align="alignleft" width="360"] করইবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হচ্ছে গাছতলায়[/caption]
উখিয়ার প্রত্যন্ত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠি অধ্যুষিত জনপদ রাজাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ছুঁয়ে পানি পড়ছে। বিকল্প ব্যবস’া না থাকায় শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে গিয়ে বইখাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপরন’ শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশুশ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় বসে পাঠদান করতে হচ্ছে। লাইব্রেরির ছাদের নিচে পলিথিন দিয়ে শিক্ষকেরা দায়িত্ব পালন করলেও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজ করছে ছাদধসের আতংক।
সরেজমিন করইবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে এলজিইডির অর্থায়নে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মিত হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, গুণগতমানসম্পন্ন উপকরণ ব্যবহৃত না হওয়ার কারণে শ্রেণিকক্ষের ছাদ ছুঁয়ে পানি পড়ছে।
সহকারী শিক্ষিকা উর্মি সালমা জানায়, শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে ভয় লাগে।
কখন জানি প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুলভবনটি ধসে পড়ে। প্রথম শিফটে পঞ্চম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণি এ তিনটি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিভেজা বেঞ্চে বসে পড়ালেখা করছে। পঞ্চমশ্রেণির ছাত্র হারুনুর রশিদ জানায়, শ্রেণিকক্ষের পলেস্তরা খসে পড়ার আশংকায় পড়ালেখায় মন বসে না।
বিদ্যালয়ের উঠানের সামনে গাছতলায় পাঠ দিচ্ছিলেন প্যারা শিক্ষক ইয়াছমিন আক্তার। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিশুশ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলার মাটিতে বসে পড়াতে হচ্ছে। তবে বৃষ্টি হলে ছুটি দিতে হয় বলে ওই শিক্ষক জানান। বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে গিয়ে দেখা যায়, ছাদের নিচে পলিথিন দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধান শিক্ষক জানে আলম জানায়, বিদ্যালয় ভবনটি ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার পরও বিকল্প ব্যবস’া না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। তিনি জানান, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে শ্রেণিরকক্ষের আসবাবপত্র, লাইব্রেরির আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদি বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন তৈরির প্রস্তাবনা অনুমোদন হলেও বাস্তবায়নের উদ্যোগ বিলম্বিত হচ্ছে বিধায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্ঘটনার আশংকা নিয়ে স্কুলের দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। ৫ জন শিক্ষক প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করাচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার ধর জানান, তিনি বিদ্যালয়ের নাজুক পরিসি’তি দেখেছেন। নতুন ভবন নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলতে হবে বলে তিনি তার মতামত ব্যক্ত করেন।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইকবাল মনির জানান, বিদ্যালয়টি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন ভবন নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো নিরাপদ স’ানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানোর অনুমতি এবং ব্যবস’া নেওয়া শিক্ষা কর্মকর্তার নৈতিক দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।