স্টাফ রিপোটার, উখিয়া :
উখিয়ায় বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত পলাতক আসামী প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও পুলিশ তাদেরকে ধরছে না। ফলে উপজেলার গ্রামগঞ্জে প্রতারণার মামলা সাজা প্রাপ্ত আসামী ও মাদক এবং মানবপাচার মামলা আসামীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জালিয়াপালংয়ের পাইন্যাশিয়া গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুস সালাম মধু নামক এক ব্যক্তি ওয়ারেন্ট মাথা নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরার ঘটনা নিয়ে এলাকায় মিশ্রপ্রতিক্রিয়া সহ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৩ শতাধিক জন পলাতক ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী রয়েছে। তৎ মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত আসামী সংখ্যাও অনেক বেশি। পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রজ্ঞাপন আদশে উল্লেখ রয়েছে প্রতি রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে কোর্ট হাজতে প্রেরন পূর্বক ওয়ারেন্ট তামিল করার। সচেতন মহলের অভিযোগ উখিয়া থানার পুলিশ রহস্যজনক ভাবে পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান দেখা যায় না। ফলে দিন দিন ওয়ারেন্টভূক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা যায়, জালিয়া পালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া গ্রামের হাজী নুরুল ইসলাম প্রকাশ গাছ কালুর ছেলে আব্দুস সালাম মধু ২০১৪ সালে ইট ভাটার ব্যবসার কথা বলে টেকনাফ উপজেলার শাহ পরীর দ্বীপ গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র আবুল ফয়েজের কাছ থেকে ৩১লক্ষ টাকা ধার নেয়। উক্ত টাকা ফেরত চাইলে আব্দুস সালাম মধু ইসলামী ব্যাংক কোটবাজার শাখার ৩টি চেক প্রদান করেন। পরবর্তীতে ওই চেক নিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে তার একাউন্টে কোন টাকা জমা না থাকায় চেক গুলো ডিজনার হয়। এ ব্যাপারে পাওনাদার আবুল ফয়েজ বাদী হয়ে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুসালাম মধুর বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৩১১/২০১৪। বিজ্ঞ আদালত উক্ত প্রতারণা মামলা প্রমাণিত হওয়ায় আসামী আব্দুস সালাম মধুকে ১বছরের কারাদন্ডসহ ১৪ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়ের রায় দেওয়া হয়।
এদিকে গত ২৫/০৮/২০১৫ সালে উখিয়া থানার এসআই শাহজাহান কামালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে কোটবাজার ষ্টেশন হতে আব্দুস সালাম মধুকে গ্রেপ্তার করে। এদিকে উক্ত মামলার সাজা কমানোর আবেদন জানিয়ে আব্দুস সালাম মধু হাইকোর্টে আপিল মামলা দায়ের করেন। যার নং- ৮০০২/১৫। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে নি¤œ আদালতে রায় বহাল রাখেন। আইনজীবিরা জানান, হাইকোর্টে আপিল মামলা খারিজ হওয়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী আব্দুস সালাম মধু কে গ্রেফতার করতে আইনী কোন বাঁধা নেই।
প্রতারণার শিকার আবুল ফয়েজ জানান, আব্দুসালাম মধু নিজেকে বড়মাপের আওয়ামীলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ও হলদিয়া পালংয়ের পাগলীর বিল সড়কে তার মালিকানা ধীন ইটের ভাটা আছে মর্মে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তার কাছ থেকে তিন দফায় ৩১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। উক্ত টাকা চাইতে গিয়ে তিনি অনেক অপমান ও অপদস্ত হতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২৪ লক্ষ টাকার আরো একটি মামলা কক্সবাজার জজ কোর্টে দায়ের করেছে। যার নং- ২৩২৫/২০১৫। উক্ত মামলাতেও আসামী আব্দুস সালাম মধুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হয়।
অভিযোগে প্রকাশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওয়ারেন্ট প্রাপ্ত আসামী মধু পুলিশকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। এমনকি মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে বাদী আবুল ফয়েজ অভিযোগ করেছেন। সচেতন মহলের অভিযোগ সাজাপ্রাপ্ত আসামী শুধু আব্দুস সালাম মধুসহ অসংখ্য মাদক ও মানবপাচার মামলার সাজাপ্রাপ্ত এবং বিভিন্ন প্রতারণার মামলার আসামী প্রকাশ্যে উখিয়ায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ রহস্যজনক ভাবে তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। সুশীল সমাজ বিষয়টি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মীর মোহাম্মদ শাহীন। কর্মসংস্থান ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। ২০১১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে ...
পাঠকের মতামত