কক্সবাজার সৈকতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে রাতারাতি নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। মানা হচ্ছে না সৈকতের অখণ্ডতা রক্ষায় মহাপরিকল্পনার (মাস্টারপ্ল্যান) নির্দেশনা। শুধু তাই নয়, বালিয়াড়ি দখল করে নির্মিত এসব অবৈধ স্থাপনায় নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। সৈকতের বালুর ওপর স্থাপনা নির্মাণের ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও সৌন্দর্য।
সরেজমিন দেখা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কক্সবাজার শহরের সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে বালিয়াড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে শতাধিক দোকান। এই পয়েন্টের সড়ক ও ফুটপাতেও বসানো হয়েছে আরও শতাধিক ভ্রাম্যমাণ হকার। এর দক্ষিণপাশে কলাতলী পয়েন্টের সি ক্রাউন হোটেলের সামনে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি দোকান। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, জয়নাল, জাকির ও গুরামিয়া নামে তিন ব্যক্তি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এসব স্থাপনা নির্মাণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বৃহত্তর সুগন্ধা ঝিনুক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দাবি করে জয়নাল নামে এক ব্যক্তি সমকালকে বলেন, দোকানগুলো ৫ আগস্টের আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ব্যবসার স্বার্থে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি জানার পর নিজ উদ্যোগে এক সপ্তাহের মধ্যে এসব স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় অভিযান চালিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার পর্যটন এলাকার জন্য ৩০ বছর (২০১১-৪১) মেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান গেজেট আকারে প্রকাশ হয় ২০১৩ সালের মে মাসে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কক্সবাজার পৌরসভা এলাকার সৈকতসংলগ্ন প্রথম ৩০০ মিটারের মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। পরবর্তী ৩০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ করা যাবে সাড়ে ছয় মিটার উঁচু বা দোতলা ভবন। তবে নির্দেশনা লঙ্ঘন করে সৈকতে এসব বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ ছাড়াও সরকার কক্সবাজারের সৈকত এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। এই গেজেট অনুযায়ী সৈকতের বেলাভূমিতে স্থাপনা নিষিদ্ধ। পাশাপাশি এ পয়েন্টের পরিবেশগত সংকটাপন্ন স্থানে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে হাইকোর্টের।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, সরকারি আর ব্যক্তিগত জমি হোক, সৈকত এলাকায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো অবকাঠামো নির্মাণের সুযোগ নেই। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে