স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সম্প্রতি কিডনি রোগের প্রকোপ বাড়ছে। কিডনি রোগীর ক্রমবর্ধমান চাপের কারণে সরকার শুধু বিভাগীয় পর্যায় নয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও কিডনির আধুনিক চিকিৎসা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতের সহযোগিতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ বেশ কিছু জেলায় অত্যাধুনিক ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে যেন ডায়ালাইসিসের জন্য রাজধানী বা বড় বড় শহরমুখী হতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপ মোকাবিলায় তিনি কিডনি হাসপাতালের সম্প্রসারণ করে শয্যাসংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান।
শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিটিউট এবং হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কিডনি হাসপাতালে আসেন। তিনি প্রথমে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। পরে ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের পাশে কিছুক্ষণ অবস্থান করে তাঁদের সাথে কথা বলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান সম্পর্কে অবহিত হন।
পরে তিনি ঊর্ধ্বতন চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময় করেন। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়ে তিনি এসময় বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলো দেশের গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল। সাধারণ মানুষের সেবা নিয়ে কোনো গাফিলতি সরকার মেনে নেবে না। এবারের ঈদে হাসপাতালের সেবা নির্বিঘ্নে রেখে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করায় তিনি ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
মন্ত্রী বলেন, সীমিত সম্পদের এই দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাকে কাঙ্ক্ষিত মানে নিয়ে যেতে সরকারের সব উদ্যোগ সফল হবে যদি চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জনবল পর্যাপ্ত থাকে। দেশে নার্স সংকট অনেক কমে গেলেও রোগীর চাপের তুলনায় ডাক্তার অপ্রতুলতা আজো দূর করা সম্ভব হয়নি। সরকারের দূরদর্শী কৌশলের কারণে বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তার অনুপস্থিতি নেই বললেই চলে। গ্রামের মানুষ আজ চিকিৎসাবঞ্চিত থাকছে না। জেলা, বড় বড় শহর ও রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে শয্যার তুলনায় কয়েকগুণ রোগী ভর্তি থাকে, তবুও মানুষ সরকারি হাসপাতাল থেকে খালি হাতে ফেরত যায় না। আমাদের ডাক্তার আর নার্সরা আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদান করছেন বলেই মানুষ তাঁদের ওপর আস্থা রেখে হাসপাতালে আসছে।
নাসিম বলেন, যদি কোনো হাসপাতালের সেবা সম্পর্কে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তবে তা দ্রুত প্রতিকারের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং সাথে সাথে অভিযুক্তের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার।
মন্ত্রী পরে হাসপাতালের আইসিইউ, ডায়ালাইসিস ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের সাথেও কথা বলে সেখানকার সার্বিক ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা লেনিনসহ মন্ত্রণালয় ও হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য গোলাম রব্বানিকে দেখতে যান এবং তাঁর চিকিৎসার খোঁজ নেন।