নিউজ ডেস্ক::
আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে যেখানে ট্যাটু করা অথবা নাক কান বা অন্য কোথাও ছিদ্র করার বিষয়ে সঠিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না। মানা হয় না সাধারণ বিধিগুলোও। ফলে উল্কি ও পিয়ার্সিং করার কারণে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু চটকদার অফারের ফাঁদে পড়ে অনেকেই ছুটছেন সেসব প্রতিষ্ঠানে।
যেসব পার্লার ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে কোনো গুরুত্ব দেয় না। তাদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন- বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা এই তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল সোসাইটি বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছে।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই বিশেষ পদ্ধতিগুলোয় গ্রাহকদের ত্বকে ছিদ্র করা হয়। এবং টেকনিশিয়ানরা সেটা করেন সঠিক কোনো যত্ন ছাড়াই। এ কারণে ব্যাকটেরিয়াসহ অন্যান্য অণুজীব শরীরে প্রবেশ করে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ব্রিটিশ এক কিশোর কানে ছিদ্র করার পর কীভাবে সেখানে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এমন হয় যে তার কানের একটা অংশ কেটে বাদ দিতে হয়।
এই ইনফেকশন অন্যের শরীরের জীবিত অণুজীব অথবা ছিদ্র করার কাজে যে সুই ও যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেগুলো থেকেও হতে পারে।
এ থেকে হতে পারে হেপাটাইটিস, টিবি (টিউবারকুলোসিস), সিফিলিস এমনকি এইচআইভি এর মতো জটিল সব রোগ।
যুক্তরাজ্যে সাম্প্রতিক ইনফেকশন প্রাদুর্ভাবের পেছনেও ছিল এই উল্কি, ত্বকে ছিদ্র বা পিয়ার্সিং করাসহ চারটি বিশেষ পদ্ধতি। যা পরবর্তীতে এলার্জি প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্য ও সোশ্যাল কেয়ার বিভাগ জানিয়ে, “ট্যাটু এবং পিয়ার্সিং সেবা সরবরাহকারীদের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ হলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আছে।
বিভাগের এক মুখপাত্র বলেন, “যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমে আমরা এসব পরিসেবায় মানুষের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ।
দ্য রয়েল সোসাইটি ফর পাবলিক হেলথের রিপোর্টে কয়েকটি বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়েছে-
১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য নন সার্জিক্যাল কসমেটিক পদ্ধতি যেমন: ঠোঁটে বা শরীরের অন্য কোনো অংশে ইনজেকশন দিয়ে ফোলানোর মতো পদ্ধতি অবৈধ করতে হবে।
যদি বিশেষ কোনো পদ্ধতিতে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে তাহলে সেই বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিল বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা দলকে জানাতে হবে।
উল্কি এবং পিয়ার্সিং-এর সরঞ্জাম শুধুমাত্র লাইসেন্স বা নিবন্ধনের নথিযুক্ত মানুষের কাছেই বিক্রি করার নিয়ম প্রণয়ন করতে হবে।
ডার্মাল ফিলার, উল্কি, পিয়ার্সিং- এই পদ্ধতিগুলোয় আইনি কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে।
প্রফেসর পভিস বলেন, “একটি উল্কি বা শরীরের কোথাও ছিদ্র করাকে খুব ফ্যাশনেবল মনে হতে পারে, তবে সেটা হেপাটাইটিস বা সিফিলিসের কারণ হোক, এটা নিশ্চয়ই কেউ চাইবে না। এজন্য সকল সংগঠনকে তাদের দায়িত্বগুলো গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে। ”