উখিয়া নিউজ ডটকম::
সারা দেশে আজ থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। প্রশ্ন ফাঁস রোধে সরকার কঠোর অবস্থান নিলেও এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত প্রশ্ন ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে এবার প্রশাসনকে বাড়তি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সব বোর্ডে মনটরিং টিম রয়েছে। টিমের সদস্যরা পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকদের নজরদারিতে রাখবে। পাশাপাশি সচিবালয়ে বিভাগীয় সম্মেলনে কমিশনারদের প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, বিগত দিনে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগের দিন রাতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হতো। বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিত। কিন্তু কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে এ পথ বন্ধ হয়েছে। গত এসএসসি পরীক্ষায় সরকারি ট্রেজারি থেকে প্রশ্ন পরীক্ষার হলে নিয়ে যাওয়ার পথে প্রশ্নের প্যাকেট খুলে মোবাইলে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেয়া হয়। প্রশ্নগুলো সমাধান করে রুমে রুমে পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এরসঙ্গে শিক্ষকরা জড়িত ছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আটককৃতরাও বিষয়টি স্বীকার করেছে। তবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষা প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/ ভেন্যু প্রধান ছাড়া কোনো শিক্ষক/কর্মকর্তা, কর্মচারী কোনো প্রকার মোবাইল ফোন বহন ও ব্যবহার করতে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/ ভেন্যু প্রধান ছবি তোলা যায় এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানায়, কেন্দ্র আকস্মিক পরিদর্শন ছাড়াও ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে। প্রশ্নফাঁস করে এ রকম কয়েকটি গ্রুপ ছাড়াও দুটি সক্রিয় গ্রুপকে কঠোর নজরদারিতে রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়াও এসব গ্রুপের ফলোয়ার প্রায় ২৪ হাজার ব্যক্তিকেও বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সব শিক্ষা বোর্ডকেও এ ব্যাপারে বাড়তি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দুই হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে আট হাজার ৮৬৪টি প্রতিষ্ঠানের আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে নয় লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ জন, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৯৯ হাজার ৩২০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ ৯৬ হাজার ৯১৪ জন এবং ডিআইবিএসে চার হাজার ৬৬৯ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। আজ সকাল ১০টায় শিক্ষামন্ত্রীর রাজধানীর ঢাকা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণ কক্ষ: পরীক্ষা উপলক্ষে বিভিন্ন বোর্ডে একটি করে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি ‘নিয়ন্ত্রণ কক্ষ’ খোলা হয়েছে। এ কক্ষ থেকে সার্বক্ষণিকভাবে সারা দেশের এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা তদারকি করা হবে। এসব কেন্দ্রের প্রধান কাজ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা। মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে, প্রশ্ন ফাঁসসহ পরীক্ষার বিষয়ে যেকোনো অপরাধের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৭২২ নম্বর কক্ষে তথ্য জানাতে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর ৯৫৪৯৩৯৬।
পাঠকের মতামত