একজন নারীর চরিত্র সম্পূর্ণরূপে পূর্ণতা পায় মা হবার পর। একজন নারী তার সর্বোচ্চ মর্যাদা পায় মা হবার পর। হাদিসে স্পষ্টভাবে আছে যে, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। কিন্তু মাকে হীন করার জন্য আমাদের সমাজে মানুষরুপী পিশাচের কোন অন্ত নেই। মায়ের গর্ভে ১০ মাস থাকার পর পৃথিবীতে আসার পর আরেকজন মেয়েকে পেয়ে কুলাঙ্গার ছেলেরা নিজের মাকে ভুলে যায়। একজনের ভালবাসার কাছে সে সকলের ভালবাসাকে তুচ্ছ করে দিতে পারে। একজন নারীর কারণে মায়েরা হয়ে যায় অবহেলিত।
বৃদ্ধা মা যখন ঘরের কোন কাজ করতে সক্ষম থাকে না, তখন তার আশ্রয়স্থল হয় ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামের এক ভয়ংকর হাজতে। স্ত্রীকে খুশি করার জন্য মা-বাবাকে দূর করতে পিছপা হয় না ছেলে। কবি ঠিক ই বলেছেন, ‘নারী তুমি কার?’
আবার অন্যদিকে নিজের মেয়েকে সুখী দেখার জন্য একজন মা যতটা ত্যাগ-তিতিক্ষা সহ্য করে, অন্যের ঘরের মেয়ের জন্য তার ১০ শতাংশ ভালবাসাও দেখায় না। মায়েরা তার ছেলের বউকে যদি নিজের মেয়ের মত করে ভালবাসত, তাহলে দুনিয়াতেই জান্নাতের দেখা মিলত। খুব অল্প সংখ্যক পরিবারে জান্নাতের ছোঁয়া পাওয়া যায়। যেখানে নেই কোন হিংসা বিদ্বেষ, নেই কোন হাহাকার, সেখানে সবাইকে সমানভাবে ভালবাসা দেয়া হয়।
এটাতো গেল, বউ-শাশুড়ির কথা। আজকাল বোন, বান্ধবী, খালা, ফুফুদের মাঝেও দেখা যায় লালসা। তারা সারাক্ষণ হিসেব করে, কার জামাই কত আদর-সোহাগে রাখে নিজ বউকে। আর নিজের জামাইয়ের সাথে তুলনা করে। আমাদের সমাজ তুলনা বিষয় টা খুব ভাল করে জানে। ছোটকাল থেকে শুনতে হয়, ‘তুই ও ভাত খাস, পাশের বাড়ির খালেক ও ভাত খায়। এরপরও তো ক্লাসে প্রথম হয়, তুই হস না কেন?’
সেই ছোটকাল থেকে একটা প্রতিযোগিতা, একটা তুলনার সাথে আমাদের পরিচয়। যা আমরা সারাজীবন নিজেদের মনে আঁকড়ে ধরে রাখি। সেই তুলনায় হিসেব করে বের করা হয়, কে কেমন সুখী। আর আমি নিজে কত বেশি অসুখী। যেদিন তুলনা শেষ হবে, সেদিন এই অশান্তি থেকে আমরা মুক্তি পাব।
‘শান্তির মা’-ও একজন নারী। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আমরা সেই নারীকে হারিয়ে ফেলেছি। তাই চারদিকে রয়ে গেছে শুধু অহংকার, হিংসা, তুলনা আর অন্ধকার দিন-রাত্রি।
সম্পাদনায়ঃ ফাতেমা তুজ জোহুরা।