ভোট কারচুপির অভিযোগ পেলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেছেন, “কোনো সেন্টারে যদি একটি ভোটও কারচুপি হয়, খবর আসে তাহলে ওই সেন্টার আমি বন্ধ করে দেব। যদি সকাল ৮টা, ৯টাতেও হয় তাহলেও আমরা ওই সেন্টার বন্ধ করে দেব, কেননা ফলাফল একটার জন্যও প্রভাবিত হতে পারে।”
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের ৩৫ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, “সিস্টেমের ওপর আস্থা রাখতে হবে। ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে। আপনারা কেউ যদি কোনো রকম ব্যত্যয় সৃষ্টি করেন, আপনাকে হয়তো দেখতে পারব না, কিন্তু সেন্টারে যদি একটি ভোটও কারচুপি হয়, খবর আসে তাহলে ওই সেন্টারটি আমি বন্ধ করে দেব।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনে অনিয়ম করতেই হবে, তা না হলে শক্তি প্রদর্শন হবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না, আপনারাও নিশ্চই এটা করেন না। শুধু প্রচারণা দিয়ে নির্বাচন হবে না। মূল নির্বাচন হবে পোলিংয়ের মাধ্যমে। ৭ জানুয়ারির যে নির্বাচন সেটি নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কেন্দ্রে কেন্দ্রে ডিক্লারেশনের মাধ্যমে আপনারা ঘরে বসেই জেনে যাবেন।”
সিইসি আরও বলেন, “নির্বাচন নিয়ে অতীতে অনেক বিতর্ক হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি তারাও বিভিন্ন কথাবার্তা বলে থাকেন। আজ এখানে এসেছি আপনাদের কাছে প্রতিশ্রুতি নিতে যাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে হয় এবং ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।”
বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ভোট হবে ৭ জানুয়ারি। বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চালাতে পারবেন তারা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় হওয়া ঠেকাতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিকল্প (ডামি) প্রার্থী রাখার নির্দেশনা আসার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার হিড়িক পড়ে। ২৬৫টি সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন ৭৪৭ জন। ইসির বাছাই, আপিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে এখন ৩৮২ জন স্বতন্ত্র ২২৫ আসনে ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ভোটে আছেন ২৬৫ জন, আর ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ২৬৩ জন। এর বাইরে আওয়ামী লীগের প্রতীক ব্যবহার করছেন শরিকদলের ৬ প্রার্থী।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর এখন পর্যন্ত ২৭টি দলের ১৫১৩ জন ও স্বতন্ত্র ৩৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। এই ১৮৯৫ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। আদালতের আদেশে আরও কিছু প্রার্থী যুক্ত হতে পারেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী, ১০-১৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী আদালতে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে। রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ সংক্রান্ত কাগজপত্র পৌঁছালে তারাও যুক্ত হবেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সংখ্যায়।