শনিবারের দিনটা ভুলতে পারবেন না বলিউড তারকা দীপিকা পাড়ুকোন, শ্রদ্ধা কাপুর ও সারা আলী খান। এদিনটা আজীবন দাগ কেটে থাকবে তাঁদের মনে। কারণ, এদিন এই তিন তারকাকে মাদককাণ্ডে জেরা করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। এনসিবির যোগাযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনজনেরই দাবি, তাঁরা কেউ কখনোই মাদক নেননি। একনজরে জেরায় উঠে আসা নায়িকাদের স্বীকারোক্তির উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
যে ‘মাল’ চেয়েছিলেন, সে ‘মাল’ মাদক নয়, দাবি দীপিকার
কাল শনিবার পৌনে ১০টা নাগাদ এনসিবির দপ্তরে পৌঁছান দীপিকা। ছিমছাম পোশাক। তারকাসুলভ কোনো অভিব্যক্তি নেই। কালো চশমায় ঢাকা ছিল না চোখ। তবে মুখ ঢাকা ছিল মাস্কে। কোটি টাকার একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হলেও এদিন ‘হুন্দাই’–এর একটি ছোট গাড়িতে চড়ে এসেছিলেন দীপিকা। কেননা, এর আগে দামি গাড়িতে চড়ে এসে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন রিয়া চক্রবর্তী।
দুই দফা জেরা করা হয় দীপিকাকে। প্রথমে একা, পরে দীপিকার ম্যানেজার কারিশমা প্রকাশের মুখোমুখি বসিয়ে। এই দ্বিতীয় দফায় দীপিকা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা স্বীকার করেন। স্বীকার করেন, ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ‘এন’, ‘জে’, ‘এস’, ‘ডি’, ‘আর’, ‘কে’র মধ্যে মাদক পরিবহন নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে। আর এই ‘ডি’ অক্ষরের পেছনে দীপিকারই নাম প্রকাশ করা হয়েছে। আর ‘কে’-এর নাম কারিশমা। ওই চ্যাটে দীপিকা কারিশমাকে লিখেছিলেন, ‘মাল হ্যায় ক্যায়া?’ (মাল আছে?) দীপিকা জেরায় জানিয়েছেন, তিনি যে ‘মাল’ চেয়েছিলেন, তা মাদক নয়। তাঁর দাবি, তিনি জীবনেও মাদক নেননি। অন্যদিকে দীপিকার ম্যানেজার জানিয়েছেন, তিনি অন্তত ছয়বার দীপিকাকে মাদক সরবরাহ করেছেন।
পার্টি করেছেন, সিগারেট খেয়েছেন, তবে মাদক নেননি
সারা আলী খানও বেলা একটায় একেবারে সাদামাটা সালোয়ার–কামিজে, চশমা চোখে, কাঁধে একটা বড় ব্যাগ ঝুলিয়ে ঢোকেন এনসিবির দপ্তরে। জেরার মুখে তিনি সুশান্তের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, ‘কেদারনাথ’ ছবির শুটিংয়ের সময় তিনি প্রেম করেছেন সুশান্তের সঙ্গে। এরপর তাঁরা একসঙ্গে প্রচুর পার্টিও করেছেন। ঘুরেও বেড়িয়েছেন। তবে কখনো মাদক নেননি। এই পর্যায়ে একটা ভিডিও দেখানো হয়, যেখানে সারা আর সুশান্ত— দুজনের হাতেই সিগারেট। এরপর সারা জানান, তিনি সিগারেট খেয়েছেন। তবে সেটি ‘নির্দোষ’ সিগারেট। বলেন, তিনি মাঝেমধ্যে ধূমপান করেন। তবে মাদক নেন না।
‘সিবিডি অয়েল’ বিষয়ে বললেন শ্রদ্ধা
এদিকে শ্রদ্ধার জবাবে সন্তুষ্ট নন এনসিবি কর্তারা। দুপুর ১২টা নাগাদ এনসিবি দপ্তরে পৌঁছান তিনি। জয়া সাহার সঙ্গে শ্রদ্ধা কাপুরের ‘সিবিডি অয়েল’ (গাঁজা থেকে তৈরি ভাংজাতীয় একধরনের মাদক)–বিষয়ক চ্যাটের বিষয়ে প্রশ্ন করলে, এক পর্যায়ে তা স্বীকার করেন শ্রদ্ধা। তবে স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি এটি গ্রহণ করতেন বলে জানান।
বাড়িতে মাদক রাখলেও চেখে দেখেননি রাকুল
এদিকে শুক্রবার নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবির) দপ্তরে গিয়েছিলেন রাকুল প্রীত সিং। সেখানে চার ঘণ্টার জেরায় অংশ নেন তিনি। রাকুলের কাছে ‘ডুবি’ আছে কি না, জানতে চেয়েছিলেন রিয়া। রাকুল জানান, সেটা তাঁর বাড়িতেই আছে। আরও জানান, ‘ডুবি’ হাতে বানানো একধরনের সাধারণ সিগারেট। এর ভেতরে গাঁজা বা অন্য কিছু নেই। রাকুল আরও জানান, রিয়া তাঁর বাড়িতে মাদক রাখতেন। কিন্তু তিনি কখনো চেখে দেখেননি।
তিন নায়িকার জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শেষ হয় শনিবার বিকেলে। তারপর সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল মুথা অশোক জৈন। এনসিবির তরফে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, রোববার দীপিকা, সারা, শ্রদ্ধা ও দীপিকার ম্যানেজার কারিশমা প্রকাশকে ডাকা হবে না। তাঁদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। আপাতত তা খতিয়ে দেখা হবে। এদিকে সারা আর শ্রদ্ধা দুজনেই এনসিবিকে বলেছেন, ‘কেদারনাথ’ ও ‘ছিছোরে’র শুটিংয়ে মাদক নিয়েছেন সুশান্ত