প্রশ্ন:;
আমার বয়স ২২ বছর। আমি আমার শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কথা শেয়ার করব। আজ থেকে চার বছর আগে একটি মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম। বছর দেড়েক আমাদের সম্পর্কের কথা গোপন থাকে। পরে সবাই জেনে যায়। আমি মেয়েটিকে অনেক ভালোবাসতাম। ও নিজেও আমাকে অনেক ভালোবাসতো। আমি ওকে বিয়ে করতে চাইলে দুই পরিবারের কেউই রাজী হয়নি। তারপর ওর সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
কয়েকমাস সময়মত গোসল, ঠিকমতো ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া করিনি। হঠাৎ একদিন খেয়াল করলাম আমার চেহারা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছে। পুরো মুখে ছোপ ছোপ দাগ, চোখের নিচে কালি পড়ে গিয়েছে, পুরো মুখ কালো হয়ে গেছে। বুঝতে পারি- আমার শরীরে সবসময় জ্বর থাকে। ময়মনসিংহ মেডিকেলে মেডিসিন ও চর্ম- উভয় বিভাগে ডাক্তার দেখাই। অনেকদিন চিকিৎসা করার পরও কোন সমাধান হয়নি। টেস্ট করার পর বুঝতে পারি আমার টাইফয়েড হয়েছে। কোর্স শেষ করি। জ্বর কমে। কিন্তু চেহারা ঠিক হয়নি। মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলাম। মানসিক বিভাগে ডাক্তার দেখানোর কথা থাকলেও আর দেখাইনি। তারপর ছয় মাস হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাই- শুধু জ্বর ও মুখের দাগের জন্য। এভাবে আরও কয়েকবার ডাক্তার পরিবর্তন করলাম। কাজ না হওয়ায় আবার হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খাচ্ছি। যতদিন কোর্স চলছিলো ততোদিন জ্বর ছিলো না। মুখের দাগ একটু কমেছিল। ডাক্তার দেখালে বলে- শরীরের তাপমাত্রা ঠিক আছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারি শরীরে জ্বর আছে। জ্বর বেশি থাকলে মুখের দাগ বেড়ে যায়। কিছুদিন ধরে আমার প্রেমিকার বড়বোন ফোন করে খুব চাপ দিচ্ছে তার বোনকে বিয়ে করার জন্য। আমি এখনো নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতি করছি। পারিবারিক অবস্থাও তেমন একটা ভালো না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, চাকরি অথবা ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিটা ভালো করে করতে চাই। তারপর বিয়ের কথা ভাবব। কিন্তু এখন যদি বিয়ে না করি তবে ওকে সারাজীবনের জন্য হারাতে হবে। এদিকে আবার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কোনটাই ভালো হয়নি। কী করব ঠিক বুঝতে পারছি না। ওকে না পেলে হয়তো মারা যাবো। অনুগ্রহ করে সমাধান দিন।
উত্তর
ভাইয়া, আপনি যে মেয়েটিকে ভালোবাসার পাশাপাশি নিজের দায়িত্ববোধ সম্পর্কেও সচেতন সেটা খুব ভালো একটা কথা। মেয়ের পরিবারকে বোঝান যে আপনি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মেয়েটিকে অবশ্যই বিয়ে করবেন। পাশাপাশি মেয়েটিরও পড়াশোনা শেষ করবার প্রতি জোর দিন। তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করুন যে একজন ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের জন্যই লেখাপড়া শেষ করে বিয়ে করা উচিত। দরকার হলে পরিবারের সম্মতিতে আংটি বদল করে রাখতে পারেন। কিন্তু আপনি যে নিজের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন সেটা তাদেরকে বোঝান। আর অবিলম্বে আপনি কোনো ভালো মনোরোগবিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করুন। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাই আপনার অসুস্থতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুভকামনা
পরামর্শ দিয়েছেন :
অথই নীলিমা
প্রভাষক
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সুত্র প্রিয় ডটকম
পাঠকের মতামত