যেন এক ক্রান্তিকাল পার করছে মানব সভ্যতা। ইতোমধ্যে নিশ্চয়ই সবার জানা হয়েছে করোনাকবলিত পৃথিবীর কথা। কাউকেই ছাড়ছে না এ ভাইরাস। শিশু থেকে বৃদ্ধ। দেশ থেকে দেশে। গ্রাম থেকে মেট্রোপলিটন শহরে।
এই পরিস্থিতে মারণব্যাধী এই ভাইরািস থেকে কিভাবে রক্ষা পাওয়া যাবে তার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. নুজহাত চৌধুরী । যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
চোখের মাধ্যমে কিভাবে করোনা ভাইরাস দেহের ভেতর যেতে পারে সে বিষয়ে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও সাধারণ মানুষ কিভাবে এ মারণব্যাধী থেকে নিজেদের সুরক্ষা রাখতে পারেন দিয়েছেন সে পরামর্শও।
ডা. নুজহাত বলেন, একটি ভাইরাস নিজে নিজে কখনই ছড়াতে পারেনা। তার একটি বাহক দরকার হয়। আমাদের দেহের কোন এক কোষের ভেতর ঢুকে তার পর সে সংখ্যা বৃদ্ধি করে। সুতরাং যদি আমি আপনি সচেতন হই। নিজে হাত দিয়ে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ না করি অথবা এক অপরের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখি তাহলে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ হওয়ার কোন সুযোগ থাকবেনা।
একজন চক্ষু বিশষেজ্ঞ হিসেবে ভিডিও বার্তায় নুজহাত জানান, চোখের মাধ্যমে কিভাবে করোনা ভাইরাস দেহের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।
তিনি বলেন, একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলবো, ‘শুধু এই সময়টাতে না। কখনই আসলে বার বার চোখে হাত দেয়া উচিত না। আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে চোখে বার বার হাত দেয়া,পানি মুছা, বার বার হাত দিয়ে চোখ পরিস্কার করা। এ ক্ষেত্রে যদি চোখ পরিস্কার করার প্রয়োজন হয় তাহলে নিয়ম মাফিক হাতটা ২০ সেকেন্ড ভালো করে ধুয়ে নিবেন। তবে যখন তখন চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন। এটা কখই করা উচিত না। মনে রাখবেন, এই হাতের মাধ্যমে কিন্তু চোখের ভেতর দিয়ে করোনা ভাইরাস দেহের ভেতর প্রবেশ করতে পারে।’
সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে পরামর্শ দিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ইদানিং খুব আতঙ্কের সাথে খেয়াল করছি এখনও অনেকে জনসমাগমে যাচ্ছেন। বিদেশ থেকে এসে অনেকেই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন না। এটা খুবই চিন্তার বিষয়। একটা কথা বলি আমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তিটি ভাইরাস ক্যারি করছেন এটা কিন্তু আমরা কেউ জানিনা। যেহেতু কে এই ভাইরাস বহন করছেন সেটা আমরা জানিনা। তাই সবাই যার যার অবস্থান থেকে এভাবে চলবো যেনো আমি অন্য কারও ক্ষতির কারণ না হই। যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা উচিত।’
ডা. নুজহাত আরও বলেন, ‘আমাদের মনে রাখা উচিত একেকটা সময় একেক ধরনের ক্রান্তিকাল আসে। এখন করোনা ভাইরাস নিয়ে ক্রান্তিকাল চলছে। এটা কিন্তু শুধু আমাদের দেশে নয়। পুরো বিশ্বেই এই ক্রান্তিকাল চলছে। আমাদের সরকার সাধ্যমতো প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। তাই আমরা কেনো এটা নাই সেটা নাই বলে বসে থাকবো। নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিরোধের চিন্তা করছিনা। সরকারের যে দায়িত্ব তারা পালন করছে বা করার চেষ্টা করছেন। এবার আমি আপনি আসুন আমাদের দায়িত্বটা পালন করি।’