এতদিন পৃথকভাবে আন্দোলন করলেও এখন মাঠে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে জামায়াতকে কাছে পেতে চাইছে বিএনপি। নির্বাচন ঠেকাতে মাঠের আন্দোলনের বিকল্প দেখছে না বিএনপি। সাতই জানুয়ারির নির্বাচন টার্গেট করে দুই-তিন ধাপে মাঠে থাকার কৌশল নিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
মাঠের আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক চাপ দুই মিলিয়ে ইতিবাচক কিছু হবে বলেই বিশ্বাস তাদের। রাজপথে শক্ত আন্দোলন গড়ে তুলতে জামায়াতকে আরও কাছে টানার তাগিদ রয়েছে বিএনপিতে। অন্যদিকে জামায়াত নেতারাও মনে করছেন, মাঠের আন্দোলন জোরালো করতে হলে জামায়াতের বিকল্প নেই।
চলমান আন্দোলনে বিএনপির পাশাপাশি থাকলেও সর্বশক্তি নিয়ে নামার আগে চূড়ান্ত কিছু হিসাব-নিকাশের ব্যাপার রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪-১৫ সালের আন্দোলনে বিএনপিকে নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন জায়ামাত নেতারা। তাদের দাবি, সে সময় জামায়াত নেতাকর্মীরা মাঠে থাকলেও বিএনপি নেতা-কর্মীরা নামেননি। ফলে আন্দোলনে নেমে তাদের অনেক নেতাকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সেই কথা মনে করেই এবার চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার আগে কিছু বিষয় স্পষ্ট হতে চান তারা। জামায়াত নেতারা চাইছেন, কিছু বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হওয়া দরকার। প্রথমত, আন্দোলনের মাঝপথ থেকে যেন তারা সরে না দাঁড়ায় এই প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। পাশাপাশি আন্দোলনের সিদ্ধান্তে বাম দলগুলো বিএনপির কাছে যেন ততটা গুরুত্ব না পায় সেটাও নিশ্চিত হতে চায় জামায়াত।
এছাড়া আন্দোলন সফল হলে আসন এবং মন্ত্রিসভা বণ্টন নিয়ে আগে থেকেই সব কিছু চূড়ান্ত করে রাখতে চায় দলটি। এসব নিয়েই সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াত নেতারা। ওই বৈঠকে জামায়াত নেতারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। বিএনপিও বিষয়টি বিবেচনায় রাখছে বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে রমনা থানা জামায়াতের সেক্রেটারি আতিকুর রহমান বলেন, অবশ্যই জামায়াতের সঙ্গে কয়েকটি বিষয়ে বিএনপির কমিটমেন্টে আসতে হবে। বিএনপি এগিয়ে আসলে জামায়াতের দিক দিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তিনি বলেন, অতীতে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে রায় দেয়াসহ একটা কঠিন সময়ে বিএনপিকে আমরা পাশে পায়নি। ন্যূনতম কোনো রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ দেখাননি বিএনপি নেতারা।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান বলেন, দলের সিনিয়র নেতারা বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে থাকেন। তাই বিএনপিসহ যাদের সঙ্গে আমাদের নেতাদের বৈঠক হয় সেখানে অবশ্যই চাওয়া পাওয়া নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, যারা মাঠে আন্দোলন করছে তারাই গণতান্ত্রিক শক্তি। আন্দোলন জোরালো করতে নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন নেতারা। তবে কৌশলে জামায়াতের বিষয়টি এড়িয়ে যান এই বিএনপি নেতা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতে ইসলামী তো বিএনপির মতোই আন্দোলন করছে। এর বাইরে আর কিছু হলে সেটা ভবিষ্যতে জানতে পারবেন। একাত্তরটিভি