স্ত্রী হত্যা মামলায় কারাবন্দি সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি করা হয়। এতে সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইনসহ আরও তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া সমকালকে বলেন, মামলার বাদী পিবিআই প্রধানের পক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় এজাহার নিয়ে যান সংস্থাটির ঢাকা মহানগর উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। অভিযুক্তরা হলেন- সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার, ইলিয়াছ হোসাইন, বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
এজাহারে বনজ কুমার বলেন, তিনি সুনামের সঙ্গে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে পিবিআই প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত। চট্টগ্রাম মহানগর পিবিআই চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা তদন্ত করে খুনের সঙ্গে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা পায়। গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। বাবুল আক্তারসহ অভিযুক্তরা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টাসহ পুলিশ ও পিবিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য ষড়যন্ত্র করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বাবুল ও অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্ররোচনায় বিদেশে পলাতক থাকা সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইন গত ৩ সেপ্টেম্বর তার ফেসবুক আইডি থেকে ইউটিউব ভিডিওর লিংক আপলোড করেন। সেটি 'স্ত্রী খুন স্বামী জেলে খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব' শিরোনামে একটি ৪২ মিনিট ২১ সেকেন্ডের ভিডিও। এতে বিভিন্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে তদন্তাধীন মিতু হত্যা মামলার তদন্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রচার করা হয়েছে। মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে ওই ভিডিওতে।
এরআগে, হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করা বাবুল আক্তারের মামলার আবেদন ২৫ সেপ্টেম্বর খাজির করে দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালত। একই সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফেনী কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দিতে যে আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার, তাও নামঞ্জুর করা হয়।
m
২০১৬ সালের ৫ জুন জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ জুন জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে স্বামী বাবুল আকতার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পিবিআই। ১০ অক্টোবর মামলার শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে। বাবুল বর্তমানে ফেনী জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।