চিকিৎসা অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের এভারকেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু বকর ছিদ্দিক।
তিন বলেন, আমার স্ত্রীকে ডেলিভারির জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা চিকিৎসায় গাফিলতি করে। যে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে দেখানোর কথা তিনিও অনেক দেরিতে আসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাচ্চা মারা যাওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণও দেখাতে পারেনি।
আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সানজিদা কবিরের তত্ত্বাবধানে ছিলেন আমার স্ত্রী। তার সব রিপোর্টই ঠিকঠাক ছিল। এর প্রেক্ষিতে গত ১৯ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৪টার দিকে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। আমরা ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছি। তখনই ডা. সানজিদা কবিরকে ফোন করে বিষয়টি অবহিত করি। উনি জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে বলেন। তিনি শিগগির আসবেন বলে জানান। কিন্তু তিনি আসেন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে। পরে ১০টা ৫২ মিনিটে নবজাতক বিশেষজ্ঞ আরেক ডাক্তার এসে বলেন, মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছে।’ ডা. সানজিদা কবির আসার আগেই সাধারণ ডাক্তারদের আনাড়িপনায় গর্ভাবস্থায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আবু বকর ছিদ্দিক।
জরুরি বিভাগের প্রবেশ ও রিপোর্টে মা এবং গর্ভস্থ সন্তান সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল জানিয়ে আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘আমার স্ত্রীর পেইনও ছিল বেশ। ডা. সানজিদা কবিরের আশ্বাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিশ্চয়তায় আমাদের বিশ্বাস ছিল, সানজিদা কবির লেবার রুমে আছেন। পরে জানতে পারি তিনি নিজে না এসে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত রাতের ডিউটিরত সাধারণ ডাক্তার দিয়ে ডেলিভারির চেষ্টা করেন। রাতের ডিউটি ডাক্তারের ডিউটির সময় সকাল আটটায় শেষ হলে তিনি চলে গেলেন। পরে সকাল আটটার দিকে আরেকজন সাধারণ ডাক্তার রোগী দেখার দায়িত্ব নিলেন। এগুলো আমরা পরে জেনেছি। এভারকেয়ারের জটিল নিয়মের জন্য লেবার রুমে কে কে আছেন, তা আমাদের জানার উপায় ছিল না। সকাল সাড়ে আটটার দিকে একজন নার্স কেবিনে এলে তার মাধ্যমে জানতে পারলাম সবকিছু সুস্থ আছে। প্রায় আটটা বেজে ৪০ মিনিটের দিকে দ্বিতীয় ডাক্তার কেবিনে এসে বললেন আপনার বেবির হার্টবিটে সমস্যা। আমি বললাম, জরুরি বিভাগের প্রবেশ রিপোর্টে তো বেবি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। আপনাদের তত্ত্বাবধানে বেবির অবস্থা খারাপ হলো কেন? তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে চলে গেলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসকের অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে আমার গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।’
এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সুত্র: প্রতিদিনের বাংলাদেশ