নিউজ ডেস্ক : ‘আয়নাবাজি’খ্যাত অভিনেত্রী মাসুমা রহমান নাবিলা এবার হাজির হয়েছেন ছোটপর্দায়। নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘সংসার’ নাটকে ইরার চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। গ্লিটজের মুখোমুখি হলেন এই নাটক ও তার বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে।
গ্লিটজ: ‘সংসার’ নিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন?
নাবিলা: নাটকে কিছু ইতিবাচক বার্তা আছে। বার্তাগুলো খুব কঠিন না, খুবই সহজ। কিন্তু সেগুলো দৈনন্দিন জীবনে আমরা উপেক্ষা করে যাই। এগুলো পরিচর্যা করলেই জীবনটা অনেক সুন্দর হয়।
চিত্রনাট্য পড়েই বুঝেছিলাম, আরিয়ান সুন্দর সুন্দর কিছু মুহূর্ত তৈরি করেছে নাটকে। নাটকটি প্রচারের পর থেকেই অনেক রকম ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছি।
একজন মা আমাকে মেসেজ করেছেন, মাত্র তার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। মেয়ের সংসার শুরু হয়েছে। নাটক দেখতে দেখতে তার চোখে পানি চলে এসেছে। তার মেয়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এটাই আসলে আমার বড় পাওয়া। অনেক মানুষ দেখেছে, এখনও দেখছে।
গ্লিটজ: আপনার চরিত্র ‘ইরা’র মধ্যে কী ধরনের বিশেষত্ব দেখছেন?
নাবিলা: অনেকে মন্তব্য করেছে, এমন বউ পেলে জীবনে কিছু লাগে না। ইরা চরিত্রটি যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। হতাশ না হয়ে সবসময় ইতিবাচক থাকে। সঙ্গীকে সাহস দেয়।
স্বামীর যখন চাকরি হচ্ছিল না তখন ইরা ওভারটাইম করছে। যতটা পারে সংসারে অবদান রাখছে। সেকারণে ইরাকে দর্শকরাও পছন্দ করছে। একজন আদর্শ স্ত্রী বা মেয়ের যেমন হওয়া উচিত ইরা অনেকটা তেমনই।
গ্লিটজ: ইরার মধ্যে নাবিলার ব্যক্তিগত জীবনের উপস্থিতি কতটুকু?
নাবিলা: স্ক্রিপ্ট পড়েই আরিয়ানকে ফোন দিয়ে বলেছিলাম, দুইটা জায়গায় আমি ইরার সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পেরেছি।
একটা হলো, কার স্যালারিতে কী হবে সেই অংশটায়। ইরার স্যালারিও ঘরে খরচ হচ্ছে। তানভীরের স্যালারি দিয়েও হচ্ছে।
আমার হবু বরের সঙ্গেও এই ধরনেরই কথা হয়। হবু বর আমাকে বলে, ‘আমার টাকা দিয়ে সংসার চলবে আর তোমার টাকা সেভ করব।’ নাটকের চরিত্রগুলোও এই ধরনের কথাই বলে। বাস্তবজীবনের কথোপকথনটাই খুঁজে পেয়েছি নাটকে।
নাটকের আরেক দৃশ্যে ছেলেটা বলে, তুমি চাকরি করছো বলে সারাদিন ব্যস্ত থাকছো। বসে থাকলে হয়ত আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে। মেয়েটা বলে, আমি মাঝে মাঝে এখনও ঝগড়া করব।
আমার হবু বরের সঙ্গেও এই ব্যাপারটা আছে। আমাদের ঝগড়া খুব কম হয়। আমি ওকে বলেছিলাম, ঝগড়া হয় না কেন? মাঝে মাঝে ঝগড়া করব আমরা। মান-অভিমানটা একটু দরকার আছে।
গ্লিটজ: ব্যক্তিগত জীবনে সংসার শুরুর আগে চিত্রনাট্যের সংসার আপনাকে কতটুকু শাণিত করল?
নাবিলা: নাটকের বিষয়গুলো মাথায় থাকবে। সংসারে নানাভাবে ক্রান্তিকাল আসবেই। মানুষের জীবনে সমস্যাগুলো একেক রকম হয়ে আসে। ওই সময় নাটকের চরিত্রের মতো মাথা ঠান্ডা রেখে ইতিবাচক থাকার অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাবো।
গ্লিটজ: কলকাতার জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী অনুপম রায়ের ‘বাংলাদেশের মেয়ে’ নামে একটি মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছেন আপনি। এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণ কী?
নাবিলা: আমি মিউজিক ভিডিও করতেই চাইছিলাম না। এটা করার প্রথম কারণ হলো-এখানে আমাকে আমার চরিত্রে দেখানো হয়েছে। গল্পটা আর আয়োজনটা ভালো লেগেছে।
আর অনুপম রায় আমার খুব প্রিয়। আমার কাছে মনে হয়েছে এই রকম সুযোগ হয়তো সবসময় হবে না। সেই হিসেবেই করে ফেলা।
গ্লিটজ: কী রয়েছে এই ভিডিওতে?
নাবিলা: মিউজিক ভিডিওটি কিছুটা ফিকশনাল। এটি করছে ই টিউনস। অনুপম রায়কে অনুপম রায় হিসেবেই দেখানো হয়েছে, আর নাবিলাকে নাবিলা হিসেবে।
এতে দেখা যাবে, দুই বাংলার দুই সেলিব্রেটির দেখা হয় কোনো একটা কারণে। এবং সেখান থেকেই ভালোলাগা।
গ্লিটজ: অনুপম রায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
নাবিলা: ভীষণ আন্তরিক একজন মানুষ উনি। আমি খুব কম কথা বলি বলে উনিও নিজে থেকেই এসে গল্প করছিলেন। এটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছিল।
উনি আমাকে বলছেন, আমি খুব শান্ত, চুপচাপ। যাওয়ার সময় কলকাতায় যাওয়ার দাওয়াত করে গেছেন।
গ্লিটজ: ‘আয়নাবাজি’র পর নতুন কোনো চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবছেন?
নাবিলা: সিনেমা করতেই তো চাই। কিন্তু সবমিলিয়ে না হয়ে উঠলে তো করার কিছু নাই। আমি দর্শক হিসেবে প্রথমে গল্পটা শুনি।
গল্প যদি কনভিন্সিং লাগে তখন চিন্তা করতে খুব বেশি সময় নিই না। গল্প ভালো লাগলে তাৎক্ষণিক ‘হ্যাঁ’ বলে ফেলি।
দুই তিনবার বসেছি বিভিন্ন সিনেমা নিয়ে। কিন্তু ওই ধরনের আগ্রহটা এখনো পাইনি যে, তাৎক্ষণিক ‘হ্যাঁ’ বলে দেব।