আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রতীক দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ ফলে যে কেউ প্রার্থী হতে পারছেন স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে৷ তবে তৃণমূলে যেন স্বজনপ্রীতি না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। দলীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের সন্তান ও আত্মীয়রা কেউ এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানিয়েছে, যে সকল এমপি, মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। এ বিষয়ে দলের প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে এমপি, মন্ত্রীরা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না৷ ‘মাইম্যান’ সৃষ্টি করতে পারবে না। যারা নিকট আত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, তৃণমূলে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমরা কাজ করছি। আমাদের দলীয় সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের দলীয় সাধারণ সম্পাদকও এ বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এমপি ও মন্ত্রী সাহেবদের আত্মীয়-স্বজনরা নির্বাচন করলে সেখানে একটা পক্ষপাতিত্ব হতে পারে। তাই দলীয় নির্দেশ— এমপি ও মন্ত্রী সাহেবদের আত্মীয়রা যেন নির্বাচন না করে। সাংগঠনিকভাবে আমরা এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে কাজ করছি।
এ ধরনের প্রেক্ষাপট তৈরির কারণও জানিয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা এবং প্রভাব মুক্ত রাখা এখন দলের লক্ষ্য। ফলে কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে তা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে শেখ হাসিনার দল।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতাদের অভিমত ছিল— প্রতীক বরাদ্দের কারণে দলের তৃণমূলে ‘গ্রুপিং বৃদ্ধি পাচ্ছে’। ফলে প্রতীক বাদ দেওয়া হয়।
সূত্র জানিয়েছে, প্রতীক তুলে দেওয়ার পর প্রভাবশালী নেতারা, বিশেষ করে স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীরা স্ব স্ব নির্বাচন এলাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। এ কারণে দলের তৃণমূলে ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়েছে।
যেহেতু এমপি, মন্ত্রী প্রশাসনের উপর খবরদারি করার সুযোগ আছে, তাই কেন্দ্রীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের নিকটাত্মীয়রা যেন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী না হতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি ওঠে।
ইতিমধ্যে দলীয় হাইকমান্ড বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন