অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা যাতে লেখাপড়া করার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে, এজন্য নির্ধারিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার আগে সকল বার্ষিক টার্মিনাল পরীক্ষা বাতিল করতে হবে।’
আরেফিন সিদ্দিক টেক্সটবুক ভিত্তিক লেখাপড়ায় ছেলে-মেয়েদের ব্যস্ত রাখার সমালোচনা করে বর্তমান প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করার পরামর্শ দেন।
ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদেরকে এক্সট্রা কারিকুলামের ওপর অতিরিক্ত সময় দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে প্রাথমিক ও জুনিয়র স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য কোন টার্মিনাল পরীক্ষা নেয়া উচিৎ হবে না।’
বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ শিক্ষা ব্যবস্থায় দৃষ্টান্ত হিসাবে জাপান ও শ্রীলংকার শিক্ষা ব্যবস্থার উল্লেখ করে বলেন, ‘এ সকল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অধিক মানবিক মূল্যবোধকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়।’ এ প্রসঙ্গে তিনি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চালু করা শিক্ষা দর্শনের উল্লেখ করে বলেন, ‘সেখানে আপনার চারপাশের পরিবেশকেই টেক্সট বুক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাপানে ৯ম গ্রেড পর্যন্ত কোন পরীক্ষা নেই। তারা মনে করে, নিয়মিত লেখাপড়ার চেয়ে অন্যান্য কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ছেলেমেয়েদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারে এ সকল দেশের শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দেন।’
অধ্যাপক ড. আরেফিন বলেন, ‘কিছু কিছু অভিভাবকের মধ্যে ছেলে-মেয়ের উচ্চতর গ্রেড জিপিএ নিশ্চিত করতে অসুস্থ প্রতিযোগিতার সুযোগ নিয়ে কিছু লোক কোচিং ব্যবসা খুলে বসেছে। এ সকল কোচিং সেন্টার সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে কোন সহায়ক হয় না। তিনি সরকারি ও বেসরকারি বাংলা ও ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অভিন্ন মৌলিক কারিকুলাম চালু করার পরামর্শ দেন। যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, সামাজিক মূল্রবোধ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানান সুযোগ থাকবে।’
‘বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা জীবনের উচ্চতর লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত মানবিক মূল্যবোধ ভিত্তিক করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত জঙ্গিবাদে আসক্ত হওয়া থেকে আমাদের সন্তানদের ফেরাতে পারব না। তিনি লেখা পড়া করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের বাইরে সন্তানদের চলাফেরা খেয়াল রাখার জন্য বাবা-মার প্রতি পরামর্শ দেন।’ খবর- বাসস।