পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়নের উত্তর জুনিয়া গ্রামের জেলে বাদল মাঝির জালে আটকা পরে দুষ্প্রাপ্য একটি ভোল মাছ। গত সোমবার গভীর সমুদ্রে জালে আটকা পড়া ৩২ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের দুষ্প্রাপ্য মাছটি। যার দাম হাঁকা হচ্ছে ২৭ লাখ টাকা।
বাদল মাঝি জানান, কয়েকদিন ধরে গভীর সাগরে মাছ ধরছিলেন তিনি। রবিবার রাতে ইলিশ মাছ ধরার জালে এই মাছটি ধরা পড়ে। আড়তে ফিরে ফিরে ওজন করে দেখেন ৩২ কেজি ৭০০ গ্রাম। পরে মাছটিতে বরফ দিলে সেটি সোনালী আকার ধারণ করে। তখন তিনি বুঝতে পারেন এ মাছটি সোনালী হাইতি ভোল মাছ।
জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মাছটির দরদাম হলেও মাত্র কয়েক লাখ টাকা দাম উঠেছে। বিক্রেতাদের দাবি মাছটির দাম আরও বেশি হবে কারণ এটি একটি বিরল প্রজাতির মাছ। তবে স্থানীয়রা বলছেন মাছটি যদি সোনালী হাইতি ভোল মাছ হয় তবে তার দাম ১৫ থেকে ২৭ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এই প্রজাতির মাছ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভোল মাছ হলো এক প্রকার ওষুধি মাছ। এই মাছ একদিকে যেমন ওষুধ হিসেবে কাজ করে তেমনি খেতেও খুব সুস্বাদু। ভোল মাছের পুরো শরীরই ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ভোল মাছের পটকা থেকে কিডনি রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি করা হয়। এই ওষুধ দিয়ে কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখা হয়। কিডনির পাথর নিরসনে ব্যবহৃত হয় ভোল মাছের পটকায় থাকা রস। ভোল মাছের হৃদপিণ্ড মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভোল মাছের হৃদপিণ্ডে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ নানাবিধ পুষ্টি উপাদান। এটি রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিশ্বব্যাপী বিবেচিত। তাই এ মাছের হৃদপিণ্ডকে সোনার হৃদয়ও বলা হয়।
আরো জানা যায়, ভোল মাছের শরীর নানা পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। এই মাছের শরীর থেকেই এমন বিশেষ ধরনের সুতো তৈরি হয় যা দিয়ে মানবদেহে সেলাই করলে ঘা শুকানোর পর সুতো শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। এই ভোল মাছ থেকে দামি মদ তৈরি করা হয়। সর্বোপরি ওষুধ তৈরিতেই এই মাছ সব থেকে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বিশ্বের নামী দামি ওষুধ কোম্পানির কাছে এই মাছের রয়েছে বিশেষ চাহিদা।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, সোনালী হাইতি ভোল মাছটি অনেক মূল্যবান। দুষ্প্রাপ্য এ মাছটি সরাসরি ডাক তুলে বিক্রি করতে চাই এবং মাছটির ন্যায্য মূল্য পেতে চাই
পাঠকের মতামত