কক্সবাজারে সম্পন্ন হয়েছে ৬ষ্ঠ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা, ক্বিরাত ও হাদর মাহফিল। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বদর মোকাম জামে মসজিদ ও শামসুন্নাহার হেফজখানায় অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা। এরপর বিকেল ৪টা কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী ময়দানে শুরু হয় ক্বিরাত ও হাদর মাহফিল। মাহফিলে স্থানীয়, জাতিয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারপ্রাপ্ত দুই ডজনাধিক হাফেজে কুরআন-ক্বারী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান মেহমান ছিলেন মক্কাতুল মোকাররমার মাদ্রাসা দারুল ফায়েজিন’র শিক্ষক হাফেজ ওয়ালী উল্লাহ নজির আহমাদ আশ-শাওকী।
মাহফিলে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্বারী হাফেজ নাজমুল হাসান, রেডিও-টেলিভিশনের সিনিয়র ক্বারী হাফেজ জহিরুল ইসলাম, ক্বারী মাওলানা হাফেজ শহীদুল ইসলাম, ক্বারী হাফেজ মাওলানা মঞ্জুর আহমদ, ক্বারী মাওলানা আমজাদ হোসেন, তানযীমুল কুররা কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক ক্বারী মাওলানা সাইফুল্লাহ কাসেমী, চট্টগ্রাম রাজারখালী দারুল ইফতার ক্বিরাত বিভাগের শিক্ষক ক্বারী মাওলানা মুফিজুর রহমান, এটিএন বাংলার উপস্থাপক ক্বারী একেএম ফিরোজ আহমদ, ক্বারী শহীদুল্লাহ, ঢাকার ক্বারী হাফেজ খুবাইবুল হক তামিম, শিশু ক্বারী হাফেজ মাহমুদুল হাসান, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হাফেজ নাজমুস সাকিব, হাফেজ যাকারিয়া ও হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন। রাত ১১টা পর্যন্ত চলে ক্বিরাত ও হাদর মাহফিল।
পুরো অনুষ্ঠান ফেসবুক, ইউটিউব ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারের জন্য মিডিয়া পার্টনার ছিলেন কক্সবাজারে প্রথম ইউটিউব চ্যানেল ডিসকভার কক্স। চ্যানেল পরিচালক আবদুল্লাহ নয়ন বলেন, কুরআন প্রেমী মানুষ সহ বিশ্ব দরবারে কুরআনের সুর পৌঁছে দিতে এরকম অনুষ্ঠান খুবই গুরুত্ব বহন করে। ডিসকভার কক্স এ জাতীয় প্রতিটি অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় বদ্ধপরিকর।
এদিকে সকালে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে (১০ পারা) সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন কক্সবাজার বদর মোকামস্থ শামসুন্নাহার হেফজখানার শিক্ষার্থী মুহাম্মদ সাবিত, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন রামু উপজেলার গর্জনিয়ার জালিয়া ঝিরি রহমানিয়া হেফজখানার শিক্ষার্থী মুহাম্মদ আনাস, তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন কক্সবাজার সদরের পোকখালী মা’হাদ মসআব বিন উমাইর (রহ:) হেফজখানার শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ, চতুর্থ হয়েছেন মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইসলামীয়া আজিজিয়া কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার মোহাম্মদ এহছান হাবীব এবং ৫ম হয়েছেন তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসা কক্সবাজারের রিফাত মোহাম্মদ নাঈম।
‘খ’ গ্রুপে (২০ পারা) সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়ে কক্সবাজার বদর মোকাম শামসুন্নাহার হেফজখানার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, ২য় হয়েছেন কক্সবাজার তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদ্রাসার হুমাইন মঞ্জুর নাঈম, তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন উখিয়ার থাইংখালীর আবু বক্কর ছিদ্দিক (রা:) হেফজখানার মোহাম্মদ আরফাত হোসাইন, চতুর্থ হয়েছেন রামুর মধ্যম উমখালী আবু বক্কর ছিদ্দিক (রা:) হেফজখানার জাহেদুল ইসলাম এবং ৫ স্থান অধিকার করেছেন কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ আছিয়া হক হাফেজিয়া মাদ্রাসার নুরশেদ আলম।
‘গ’ গ্রুপে (৩০ পারা) সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে প্রথম হয়েছেন কুতুবদিয়ার আছিয়া হক হাফেজিয়া মাদ্রাসার শোয়াইব উদ্দীন কুতুবী, ২য় স্থান অধিকার করেছেন রামুর গর্জনিয়া জালিয়াঝিরি রহমানিয়া হেফজখানার হেফাজতুর রহমান, ৩য় হয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলার মুহাম্মদীয়া ছৈয়্যদিযা হাফেজিয়া মাদ্রাসার রবিউল হুদা, চতুর্থ হয়েছেন কুতুবদিয়ার আদর্শ হাফেজিয়া মাদ্রাসার আছহাব উদ্দিন ও পঞ্চম হয়েছেন উখিয়ার থাইংখালী দারুত তাহজীব হেফজখানার আরিফুল ইসলাম।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি চট্টগ্রামস্থ জামেয়া দারুল মা’রিফ আল ইসলামীয়ার প্রধান পরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ সুলতান যওক নদভী।
সর্বোচ্চ নাম্বারপ্রাপ্ত ১৫ প্রতিযোগি কক্সবাজারে বাচাই পর্বে উত্তীর্ণ হলো। পরবর্তীতে তারা হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্বের জন্য চট্টগ্রাম যাবেন। চট্টগ্রামে যারা উত্তীর্ণ হবেন তারা চুড়ান্ত পর্বে অংশ নিবেন রাজধানী ঢাকায়।
মাহফিল পরিচালনা করেন এডভোকেট হাফেজ রিদওয়ানুর কবীর, ডাঃ হাফেজ ফয়সাল বিন নুরুল হুদা ও হাফেজ সাজেদুল ইসলাম।
হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুছ ফরাজী বলেন, আল্লাহর রহমত এবং সকলের সহযোগিতায় প্রতিযোগিতা ও ক্বিরাত মাহফিলটি সফল হয়েছে। হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন এ প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখবে-ইনশা আল্লাহ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আট উপজেলার তিন শতাধিক হাফেজে কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতিযোগিরা চমৎকার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। যারা জয়ী হয়েছেন খুব সহজে হননি। কারণ সব প্রতিযোগিই ভাল ফলাফল করেছে।
এরকম প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাবে বলে মনে করেন তিনি।