চট্টগ্রাম: অভিযান চালিয়ে সাত ‘ভয়ঙ্কর যাত্রী’কে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। সংঘবদ্ধ হয়ে যাত্রী সেজে বাসে উঠে ছিনতাই করাই তাদের পেশা। তারা সকলেই নারী।
শুক্রবার (২৯ জুন) রাতে অভিযান চালিয়ে সীতাকুণ্ডের ফকিরহাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মোছাম্মদ রাহেলা (৪০), মোছাম্মদ আফিয়া বেগম (১৮), ফুলতারা বেগম (২২), শাহার বানু (৫৫), সুলতানা বেগম (২৩), নাজমা বেগম (৩৫) ও মরিয়ম বেগম (২৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, কোতোয়ালী এলাকায় একটি বাসে করে যাচ্ছিলেন রুমু নামের এক মেয়ে। কিছুদুর যেতেই দেখেন পাঁচ ছয়জন মহিলা হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠল। এরপর বাস চলা শুরু করলেই রুমু এসব মহিলার অস্বাভাবিক আচরণ দেখতে পান। পর্যাপ্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও গায়ে লেগে থাকা, ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দেওয়া, কৃত্রিম ভিড় সৃষ্টি করা। এর ফাঁকেই হঠাৎ তিনি তার ঘাড়ে একটা স্পর্শ অনুভব করেন। হাত দেওয়ার সাথে সাথেই দেখেন তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন উধাও। সাথে সাথেই তিনি চিৎকার করে পাশে থাকা একজনকে ধরে ফেলেন। অন্য যাত্রীরা এসময় ছুটে এলে সুযোগ বুঝে কিছু মহিলা পালিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, আটক ওই মহিলা সবকিছু অস্বীকার শুরু করে। এক পর্যায়ে সবাই মিলে সেখানকার টহল পুলিশের সহযোগিতা গ্রহণ করে। টহল পুলিশ প্রথমেই আটককৃত মহিলার কাছ থেকে ছিনতাইয়ের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগরী এবং সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রা ভয়ঙ্কর করা সাত ‘ভয়ঙ্কর যাত্রী’কে আটক করে। এসময় ছিনতাই হওয়া চেইনটিও উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, ওরা সাতজনই সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র। সাতজনই মহিলা। সবাই যাত্রী। সবসময়ই যাত্রী। দিনেও যাত্রী। রাতেও যাত্রী। সারাদিনই যাত্রা’র ওপরে থাকেন তারা। কখনো বাসে। কখনো বা রাইডারে। যাত্রাতেই পার হয় তাদের রাত ও দিন। সাধারণত যেসব গাড়িতে মেয়ে কম কিন্তু ভিড় বেশি সেসব গাড়িতে উঠতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। আর সেই মেয়ে যদি দাঁড়ানো থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। এসব গাড়িতে উঠে প্রথমেই তারা দাঁড়ানো মেয়েটির চারপাশে দাঁড়িয়ে যায়। এরপর গাড়ির লক্কড়ঝক্কর লাফ, যাত্রীদের ভিড় সাথে এসব মহিলার ঠেলাঠেলি পেরিয়ে যখন মেয়ে গন্তব্যে পৌঁছায় তখন দেখে হয়ত তার ব্যাগ নতুবা মোবাইল নেই।
গ্রেফতারকৃতদের বিরূদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
পাঠকের মতামত