ডেস্ক রিপোর্ট : ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে খেলতে নেমে সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ রানের জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এ ম্যাচে জয়ের ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে লিড নিলো টাইগাররা।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১০ মাস বিরতির ইতি হয় এ ম্যাচ দিয়েই। ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দিন-রাত্রির এ ম্যাচটি শুরু হয় দুপুর আড়াইটায়। দীর্ঘ বিরতির চ্যালেঞ্জ উড়িয়ে দুরন্ত শুরুর আশা নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা। তামিম-সাকিব-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আফগানদের ২৬৬ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় টাইগাররা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে হাতের ইনজুরি থেকে মাত্রই সেরে উঠা টাইগারদের ওপেনার তামিম ইকবাল খেলেন ৮০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। এটি ওয়ানডেতে তার ৩৩তম হাফ-সেঞ্চুরি। এছাড়া, ৬৫ বলে নিজের অর্ধশতকের দেখা পান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এটি ওয়ানডেতে তার ১৫তম হাফ-সেঞ্চুরি। ৪১তম ওভারে বিদায় নেন ৬২ রান করা রিয়াদ। তার ৭৪ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার আর দুটি ছক্কার মার।
৪৮তম ওভারে বিদায় নেন সাকিব। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসে ৪৮ রান। ৪০ বলে তিনটি চারের সাহায্যে সাকিব তার ইনিংসটি সাজান।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে সফরকারীদের ইনিংস থামে ২৫৮ রানের মাথায়।
আফগানদের হয়ে ইনিংস শুরু করেন মোহাম্মদ শাহজাদ এবং সাবির নুরি। টাইগারদের হয়ে বোলিং শুরু করেন মাশরাফি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনের করা বলে স্লিপে ক্যাচ দেন মোহাম্মদ শাহজাদ। সেটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন ইমরুল কায়েস।
ইনিংসের সপ্তম ওভারের শেষ বলে মাশরাফিকে মোকাবেলা করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন মোহাম্মদ শাহজাদ। বিদায়ের আগে ২১ বলে তিনি করেন ৩১ রান। তার ইনিংসে ছিল চারটি চার আর একটি ছক্কার মার।
পরের ওভারে সাকিবকে আক্রমণে আনেন মাশরাফি। দলপতির আস্থা রাখতে সাকিব এলবির ফাঁদে ফেলে তুলে নেন আরেক ওপেনার সাবির নুরিকে। আর এই উইকেটের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক আবদুর রাজ্জাককে (২০৭) স্পর্শ করেন সাকিব।
দলীয় ৪৬ রানের মাথায় দুই ওপেনার ফিরে গেলেও বড় জুটি গড়েছেন রহমত শাহ ও হাসমতউল্লাহ শহীদি। এই দুই ব্যাটসম্যান জুটি গড়েছেন ১৪৪ রানের। ইনিংসের ৪১তম ওভারে সেই জুটি ভাঙেন সাকিব। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ৭১ রান করা রহমত শাহ। বিদায় নেওয়ার আগে এই আফগানের ইনিংসটি সাজানো ছিল ৯৩ বলে দুটি চার আর তিনটি ছক্কায়। দলীয় ১৯০ রানের মাথায় আফগানদের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে।
এরপর তাইজুল ফিরিয়ে দেন হাসমতকে। ব্যক্তিগত ৭২ রান করে ফেরেন ১১০ বলে ছয়টি চার হাঁকানো হাসমত। ৪৪তম ওভারে দলীয় ২১০ রানের মাথায় আফগানদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে।
ইনিংসের ৪৬তম ওভারে মাশরাফির বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৭ রান করা নাজিবুল্লাহ জাদরান। দলীয় ২৩০ রানের মাথায় আফগানদের পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে। ৪৮তম ওভারে তাসকিন ফেরান ৩০ রান করা মোহাম্মদ নবীকে। একই ওভারে টাইগার এই পেসার ফিরিয়ে দেন ১০ বলে ১০ রান করা আফগান দলপতি স্তানিকজাইকে।
ইনিংসের ৪৯তম ওভারে রুবেল বোল্ড করেন রশিদ খানকে। শেষ ওভারে আফগানদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রান। তবে, তাসকিনের করা সেই ওভারের প্রথম বলে দুই রান নিলেও দ্বিতীয় বলে এলবির ফাঁদে পড়েন মিরওয়াইস আশরাফ। তৃতীয় বলে এক রান নেয় সফরকারীরা। চতুর্থ বলে আরও দুই রান তুলে নেয় সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। পঞ্চম বলে লাইন মিস করে কোনো রান তুলে নিতে পারেননি দৌলত জাদরান। আর শেষ বলে জাদরানকে ফিরিয়ে দেন তাসকিন।
নির্ধারিত ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে আফগানদের ইনিংস থামে ২৫৮ রানের মাথায়।বাংলানিউজ
পাঠকের মতামত