উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮/০৮/২০২৩ ৩:২৯ পিএম

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দরগাহ পাড়ার কৃষক সেলিম উদ্দিন (৫৪)। তিনি প্রথমবারের মতো ‘ব্ল্যাক বেবি’ জাতের তরমুজ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। চলতি মৌসুমে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ১ লাখ ১২ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। খেতে এখনো ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ আছে। এসব তরমুজ চাষ করতে তাঁর খরচ হয়েছিল প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। শীতকাল ছাড়া বছরের যে কোনো সময় দুই থেকে তিনবার এই তরমুজ চাষ করা যায়।

গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভয় ও শঙ্কা নিয়ে প্রথমবারের মতো নিজের ৩৩ শতক জমিতে ‘ব্ল্যাক বেবি’ জাতের তরমুজের বীজ বপণ করেন কৃষক সেলিম উদ্দিন। সমন্বিত কৃষি ইউনিট পল্লী-কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় এবং কৃষি উন্নয়ন বিভাগের ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) কর্মকর্তাদের পরামর্শে দুই মাসের মাথায় তিনি তরমুজের ভালো ফলন পেয়েছেন।

২৪ আগস্ট দুপুরে দরগাহ পাড়ায় তরমুজ খেতে গিয়ে কৃষক সেলিম উদ্দিনকে তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দরে তিনি তরমুজ বিক্রি করছিলেন। একেকটি তরমুজের ওজন ২ থেকে ৩ কেজি। কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটা, লালদিঘির পাড়, থানা রোড এলাকার ফলের দোকানগুলোতে এসব তরমুজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকা।

তরমুজ চাষি সেলিম উদ্দিন বলেন, আগে তিনি সবজির চাষ করতেন। বাজারে বিদেশি জাতের ‘ব্ল্যাক বেবি’ তরমুজ চড়া দামে বিক্রি হতে দেখে তাঁর আগ্রহ বাড়ে। তিনি বেসরকারি সংস্থা আইডিএসএফের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো এই তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন।

সামনের বছর ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ তিনগুণ বাড়ানো কথা জানিয়ে সেলিম উদ্দিন বলেন, এই তরমুজ চাষে লাভ দেখে এলাকার বহু কৃষক এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুলের কৃষক আমজাত হোসেন সম্প্রতি সেলিম উদ্দিনের তরমুজ খেতে ঘুরে এসেছেন। চাষ পদ্ধতিও জেনে নিয়েছেন। সামনের মৌসুমে তিনি দুই একর জমিতে তরমুজ চাষের চিন্তা করছেন। আমজাত বলেন, এসব তরমুজ একদিকে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাবে, অন্যদিকে দামও ভালো পাওয়া যাবে।

আইডিএফ কক্সবাজার শাখার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোছাইন বলেন, জেলায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজের চাষাবাদ হয় না। এই প্রথম সেলিম উদ্দিনের মাধ্যমে ব্ল্যাক বেবি তরমুজের চাষ হলো। এই তরমুজ চাষে তাঁরা কৃষকদের সহায়তা করছেন।

কৃষি কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ভবিষ্যতে কক্সবাজারে ব্ল্যাক বেবি তরমুজের চাষ বেড়ে যাবে। সাধারণ তরমুজের চেয়ে এই তরমুজ বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদ। এই তরমুজের ওজন ২ থেকে সাড়ে ৩ কেজি পর্যন্ত। বীজ বপনের ৪০ দিনের মধ্যে ফুল ও ফল আসে। ফল ধরার ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়। বিদেশি জাতের এই তরমুজ শীতকাল ছাড়া বছরের যেকোনো সময় দুই থেকে তিনবার আবাদ করা যায়। বৈশাখ মাসের শুরুতে চাষ করলে বছরে একই জমিতে তিন বার ফলন পাওয়া যায়।

আইডিএফ সমন্বিত কৃষি ইউনিটের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধান কৃষিবিদ আজমারুল হক বলেন, কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে ফল চাষের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজসহ নানা ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আইডিএফ অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। এতে খাদ্যের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আইডিএফ কক্সবাজারে কৃষকদের ফলের চারা, সার, কীটনাশক ইত্যাদি সরবরাহ করছে। সুত্র: প্রথম আলো

পাঠকের মতামত

উখিয়ার সোনার পাড়া হাটেই বিক্রি হচ্ছে ৮০ লাখ টাকার সুপারি, খুশি চাষিরা

আব্দুল কুদ্দুস,কক্সবাজার কক্সবাজারে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে সুপারির। ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্প মুখি নয়, কলেজ মুখি হতে হবে শিক্ষার্থীদের-শাহজাহান চৌধুরী

নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষায় মেধা প্রস্ফুটিত হয়। উচ্চ শিক্ষায় অভিভাবক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে আগামীর সুন্দর ...

চেয়ারম্যান ও ৩ প্যানেল চেয়ারম্যান অনুপস্থিত : হ্নীলা ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম বন্ধ

টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ইউনিয়নেরে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান ৩ জন অনুপস্থিত ...