সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও::
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী মেদাকচ্ছপিয়া স্কুল পাহাড়ে নির্বাচনে পরাজয়ের জের ধরে সন্ত্রাসী হামলায় কলেজ ছাত্রসহ কম-বেশী ১০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে বহলতলী সাইক্লোন সেল্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল, জানালা, রাইচ মিলের বৈদ্যুতিক মিটার ও মহল্লার ঘেরা বেড়া। এতে আহতরা হলেন বর্ণিত এলাকার তাজর মুল্লুকের পুত্র কলেজ ছাত্র রেজাউল করিম আনু (২০), রফিকুল ইসলাম (৩২), মৃত ইসলাম আহমদের পুত্র শাহ আলম (৫৩), তার পুত্র সাজ্জাদ হোসেন (২২), মৃত ফজল করিমের পুত্র শাহ আলম (৪৮), মৃত মিয়া হোছনের পুত্র আমির মোহাম্মদ (৫৫), আবছারের পুত্র স্কুল ছাত্র রিফাত (৮), আলতাছের পুত্র ইসমাইল (৩৩), মৃত সোলতান আহমদের পুত্র আবুল কালাম আবুইয়া (৪০)। গত শনিবার সন্ধ্যা ও রবিবার সকালে দুদফে ঘটে হামলার এ ঘটনা। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশের এসআই এনামুল হক ও এসআই কবির ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত খুটাখালী ইউপি নির্বাচনে ১,২,৩নং আসনের মহিলা মেম্বার প্রার্থী রাজিয়া সোলতানা পরাজিত হন। পরাজয়ের জের ধরে এলাকায় বিভিন্ন সময় স্থানীয়দেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারধরের হুমকি দেয়। গত শনিবার রাজিয়ার লোকজন স্কুল পাহাড় এলাকায় অসমাজিক কার্যকলাপ চালায়। এতে বাধা দেয় স্থানীয়রা। এ ঘটনাকে পুজি করে সাবেক মহিলা মেম্বার রাজিয়া, বশির আহমদের নেতৃত্বে প্রায় ১০/১২ জনের সন্ত্রাসীরা লাঠি সোটা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে হামলা চালায় এতে কলেজ শিক্ষার্থীসহ কম-বেশী ১০ জন গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয় সাবেক মেম্বার আবু তালেব জানান, মহিলা মেম্বার রাজিয়ার লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী রেজু, আবদুর রহিম, মোঃ জলিল, আবদুল্লাহ, আঃ শুকুর, শফি, ছরওয়ার, নুরুল আবছার, মোক্তার, মামুন, শুক্কুর, জামাল, গিয়াস উদ্দিনসহ প্রায় ১০/১২ জন লোক নির্বাচনে পরাজয়ের জের ধরে এলাকার নিরীহ লোকজনের উপর অতর্কিত অবস্থায় হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি মধ্যস্থতা করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের রোষানলে পড়েছেন। তার সহযোগিতায় রক্ষা করা হয়েছে বড় ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হানাহানি থেকে।
বহলতলী সাইক্লোন সেল্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু তৈয়ব জানান, সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি স্কুলের দেয়াল, জানালা ও রাইচমিলের বৈদ্যুতিক মিটার। তাদের অত্যচারে ইতিমধ্যে এলাকা ছাড়া হয়েছেন একাধিক পরিবার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চলাচলের রাস্তাসহ যানবাহন। তাদের কাছে কালাচাঁন হাজী পাহাড়ের লোকজন জিম্মি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর থেকে রাজিয়া মেম্বারের লোকজন রাশেলের ফার্মেসী, ছৈয়দ আলমের রাইচমিল, খোকনের মুদির দোকান, ছাবের মৌলভির বাড়ি ও ডাঃ বুরহানের বসতবাড়ীতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে।
এদিকে সংঘটিত ঘটনায় স্থানীয় নবনির্বাচিত মেম্বার ডাঃ তারেকুল ইসলাম, মেম্বার ছলিম উল্লাহ, মেম্বার গিয়াস উদ্দিন, মেম্বার অলি আহমদ ও সাবেক মেম্বার খলিলুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হামলায় আহতদের খোজ খবর ও ক্ষয়ক্ষতির সত্যতা পেয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি বর্তমানে খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওঃ আবদুর রহমান উভয় পক্ষের মধ্যে মিমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন। বুধবার সাক্ষ্য প্রামাণের ভিত্তিতে সালিশী বৈঠকে ঘটনার সুরাহা হবে বলে পরিষদ সূত্রে জানা গেছে।
পাঠকের মতামত