দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেছেন, “কক্সবাজার পর্যটন এলাকা, এখানকার মানুষকে যেকোনো মূল্যে দুর্যোগ থেকে রক্ষায় সরকার কাজ করছে। আগামীতে ঝুঁকি মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকার মুজিবকিল্লাগুলো আধুনিকায়ন করা হবে। এক কথায়, সরকার দুর্যোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করছে।”
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সকলকে সততা, দক্ষতা ও নির্মোহভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’’
মতবিনিময় সভায় মাঠকর্মী ও কর্মকর্তাদের বক্তব্যে দুর্যোগকালীন সময়ে মাঠপর্যায়ের নানামুখী চ্যালেঞ্জের চিত্র উঠে আসে। এর মধ্যে- পরিবহন সংকট, অ নুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, জরাজীণ সাইক্লোন শেল্টারগুলো আধুনিকায়ন না হওয়া ইত্যাদি।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরেজমিনে মাঠকর্মীদের কাছ থেকে জানতে এসেছি। মাঠকর্মীদের কথা বলব। একই সাথে রোহিঙ্গাদের কার্যক্রম বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন চাই।”
তিনি বলেন, “মানুষ আর পশু একসাথে থাকবে, এটাতো সম্ভব না। দুর্যোগের সময় কিভাবে এই দুটি বিষয় আলাদা করা যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান গাছ কাটার করাত, যন্ত্রপাতি, ভেহিকল, সংকটের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠানোর জন্য লিখিতভাবে দিয়েছেন বলে জানান।
শরনার্থী, ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “কক্সবাজার ২৮ লক্ষ জনসংখ্যার সাথে ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাসহ প্রতিটি মানুষই দুর্যোগ দুর্যোগ কবলিত।” তিনি মন্ত্রীর সশরীরে কার্যক্রম দেখতে আসায় সাধুবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, “কক্সবাজার দুর্যোগ-প্রবণ এলাকা। সর্বপ্রথম মাননীয় মন্ত্রী কক্সবাজারে আগমন আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।”
এসময় জেলা প্রশাসক নানান সময়ে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি হামুনের সময় গাছপালা, ঘরবাড়ির ক্ষতির চিত্র তুলে ধরেন।
সভায় জেলা প্রশাসক পাহাড় ধস এবং পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথা বলেন তিনি। এছাড়া দুর্যোগে মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে আনার জন্য যোগাযোগ ভেহিকল সাপোর্ট বৃদ্ধির কথা বলেন। তিনি বিশেষভাবে দুর্যোগের সময় সেন্টমার্টিনের মানুষের বাঁচার জন্য সেখানে সাইক্লোন শেল্টার স্থাপনের কথা বলেন। এছাড়াও স্কুল বেইজড সাইক্লোন শেল্টারে বেঞ্চ বা অন্যান্য সামগ্রী থাকায় দুর্যোগকালীন সময়ে এসব শেল্টার প্রস্তুতকল্পে নানা অসুবিধার কথা উল্লেখ করেন।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (এডিএম) ইয়ামিন হোসেন, বিভীষণ কান্তি দাশ, উপজেলা কমকতাগণ, সিপিপি পরিচালক আহমেদুল হক, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কমকতা, উপজেলা প্রকৌশলী, সিপিপি কর্মকর্তাগণ।