জুলাই-আগস্টে আন্দোলন দমন
কক্সবাজারের সাত মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিল পুলিশ
এ এইচ সেলিম উল্লাহ::
স্বৈরাচার হাসিনার পতনের আগে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কক্সবাজারের সাত মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র মতে, জুলাই -আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে কক্সবাজারে আ.লীগ, ছাত্রলীগ ও জাসদ নেতা বাদী সাত মামলা দায়ের করেন। ওইসসব মামলায় এজাহারনামীয় ৩২১ জন ও অজ্ঞাত ১৩০০ জনকে আসামি করা হয়। ওই সময় প্রায় শতাধিক বিএনপি -জামায়াত ও ছাত্রদের গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তারা সবাই জামিনে মুক্ত হয়। সাত মামলার মধ্যে ৬ টি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ও একটি চকরিয়া থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (,ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘কিছু মামলা ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হয়েছিল, সেগুলো সরকারের নির্দেশে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্র-জনতা কীভাবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে সেটা আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি, কীভাবে তারা জীবন বিপন্ন জেনেও আন্দোলনে আসে। তাদের কারণে আজকের এই বাংলাদেশ। তাদের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে মনে রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।
পুলিশের স্থাপনায় হামলা জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনতার সঙ্গে পুলিশের একটা ব্যবধান হয়ে গিয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে ৫ আগস্টের পরবর্তী সময় পুলিশের স্থাপনায় হামলা হয়েছে, সেটা কিন্তু জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আমরা চিন্তা করছি, কীভাবে আমরা জনগণের কাছাকাছি যেতে পারব। জনগণের জন্য কাজ করতে পারব।
কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাকের সাজানো দায়েরকৃত মামলার আসামি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল, কক্সবাজারের আইটি কর্মকর্তা এমরান ফারুক অনিক মামলা প্রত্যাহারের খবর শুনে, আল্লাহ দরবারে শোকরিয়া আদায় করে বলেন, ‘সত্য হউক, মিথ্যা হউক একটি মামলা একজন মানুষ ও তার পরিবারকে পঙ্গু করে দেয়। ঠিক ছাত্রলীগ নেতার সাজানো মামলায় পরিবার থেকে আমাকে আড়ালে থাকতে হয়েছে। তিনি বলেন, একদিন সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায় ছিলাম। সেই আশায়ই আল্লাহ পূরন করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণের পর ১০ আগস্ট সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে গণআন্দোলন দমনে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনাসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনকে দমন করতে যেসব ফৌজদারি মামলা হয়েছে, সেগুলো তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
পাঠকের মতামত