শাস্তি দেওয়ার নামে এক তরুণকে বর্বর নির্যাতনকারী কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সেই নব্য চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এই বর্বর নির্যাতনের ঘটনার ব্যাপারে পেকুয়া থানা পুলিশ সেই নব্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের অনুমতি প্রার্থনা করে আজ রবিবারই আদালতের নিকট প্রার্থনা জানাবে। এর আগে আজ শনিবার উক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নির্যাতনের বিচার চেয়ে পেকুয়া থানায় এক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার তরুণ রেজাউল করিমের জ্যেষ্ঠ ভাই শহিদুল করিম পেকুয়া থানায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে এই অভিযোগ দাখিল করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন-গত বৃহষ্পতিবার টৈটং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও টৈটং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে উত্যক্ত করার অভিযোগ এনে তার ভাই রেজাউল করিমকে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এমনকি তার ভাইয়ের হাত-পা বেঁধে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে উক্ত চেয়ারম্যান দফায় দফায় পদদলিতও করেন। এদিকে আজ দিনের প্রথম ভাগে পেকুয়া থানায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার খবর পেয়ে নির্যাতিত রেজাউলের পরিবার এখন হুমকির মুখে পড়েছে। আজ বিকাল থেকেই চেয়ারম্যানের লোকজন পরিবারের লোকজনদের হুমকি দিয়ে আসছেন-অভিযোগ তুলে নিতে। প্রসঙ্গত গত বৃহষ্পতিবার একটি সিএনজি চালিত ট্যাক্সিসহ এক মাদ্রাসা ছাত্রী ও রেজাউল করিম নামের এক তরুণকে টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্যরা আটকায়। পরে আটক তরম্নন রেজাউলকে হাত-পা বেঁধে মারধরের পর ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের নব্য চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী এসে একটি লাঠি নিয়ে তাকে মারধর করে। পরে তরুণ রেজাউলকে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে চেয়ারম্যান দফায় দফায় পদদলিত করেন। নির্যাতনের শিকার রেজাউল ও সিএনজি চালককে পরে পেকুয়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পুলিশ এই দুইজনকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট পাঠায়। ম্যাজিস্ট্রেট ইভটিজিংয়ের অভিযোগে রেজাউলকে তিন মাস ও সিএনজি চালককে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এ ঘটনার সচিত্র প্রতিবেদন গতকালের (শুক্রবার) কালের কণ্ঠ অনলাইনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তোলপাড় শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া মোহাম্মদ মুস্তাফিজ ভূঁইয়া আজ সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন-'নির্যাতিত রেজাউলের ভাই থানায় এসে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত পদড়্গেপ নেয়ার জন্য আদালতের অনুমতি দরকার। এ জন্য রবিবারই অনুমতির প্রার্থনা আদালতের নিকট চাইব।' তিনি বলেন-আসলে যে মেয়েটি নিয়ে কথা উঠেছে সে একজন মাইনর মাদ্রাসা ছাত্রী। তার সাথে নির্যাতিত এবং দন্ডিত তরম্নন রেজাউলের কোন সর্ম্পকও নেই বলে মাদ্রাসা ছাত্রীটি লিখিতভাবে পুলিশকে জানিয়েছে। রেজাউল এই ছাত্রীকে ট্যাক্সিতে তুলে জোর করে বিয়ে করতে নিয়ে যাবার কথাও পুলিশকে জানানোর কথাও জানান-ওসি। থানার ওসি আরো জানান-'চেয়ারম্যানের বিরম্নদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা শুনে তিনি (চেয়ারম্যান) এখন আমাকে কাকুতি-মিনতির সুরে বলছেন-স্যার আমাকে বাঁচান।'