কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোবাইলে লুডুখেলা এখন জুয়ায় পরিণত হয়েছে। ক্রিকেট ও ‘লুডু গেম’ খেলার বাজি ধরে জুয়ার আসরে তরুণ-কিশোর থেকে শুরু করে যুবকরাও ঝুঁকে পড়েছে। বাজার, মহল্লা, অফিস, চায়ের দোকান ও মাঠে এই জুয়ার আসর বসছে। এই নিয়ে চলছে সামাজিক নানা অশান্তি। অনেকেই এই জুয়ার খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন। নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়েছেন।
সম্প্রতি চকরিয়া উপজেলায় পুলিশের ‘ওপেন হাউস ডে’ অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধিরা এমন অভিযোগ তুলেছেন। ওই অনুষ্ঠানে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান (সেবা) প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চকরিয়া থানার প্রশাসনকে জুয়াড়িদের তালিকা করার জন্য নির্দেশ দেন।
চকরিয়া পৌরশহর ও কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা। খুটাখালী বাজারের দক্ষিণ মাথায় একটি দোকানে ৮-১০ কিশোর জেঁকে বসে মোবাইল ফোনে লুডু খেলছিল। ওই দোকানের পাশে একটি চায়ের দোকানে চাপাচাপি করে ১২-১৫ যুবক উচ্ছ্বাস করে লুডু খেলছেন। একই দোকানে বড় স্মার্ট টিভিতে চলছে ক্রিকেট খেলা। সেখানে চার-ছক্কা হলেই উল্লাস করছে কয়েকজন তরুণ-কিশোর। কোনো দলের উইকেট গেলে আনন্দে লাফালাফি শুরু হয়। এ সময় সবার হাতেই ছিল বাজির টাকা।
চকরিয়া পৌরশহরের থানার রাস্তার মাথায় একটি চায়ের দোকানে বসে খেলা দেখছিল ১৫ থেকে ২০ জন তরুণ। রান, বল, উইকেটের হিসাব করে একজন অন্যদের কাছ থেকে টাকা ভাগাভাগি করছেন। বাজিতে হেরে গেলেই গুনতে হচ্ছে টাকা। সেসব দোকানে মুঠোফোনে লুডু গেম খেলা চলে নিয়মিত।
কয়েকজন জনপ্রতিনিধি বলেন, মোবাইল ফোনে লুডুখেলার কারণে প্রতিদিনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। অনেক যুবক আয়ের বড় অংশ লুডু গেমের আড়ালে জুয়া খেলে হারিয়ে ফেলছেন। এতে সামাজিক অপরাধ বাড়ছে।
ডুলাহাজারা ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সিন্টু কুমার চৌধুরী বলেন, ‘আইপিএল ক্রিকেট খেলা ও অ্যাপসভিত্তিক লুডু গেম খেলা নিয়ে সামাজিক অপরাধ বাড়ছে। এই কর্মকাণ্ড আগামী প্রজন্মের জন্য হুমকি।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে পুলিশের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। সে জন্য নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে