ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৯/২০২৪ ৯:১১ পিএম

কক্সবাজারে অবৈধ রেন্ট বাইকের দাপট, বাড়ছে দুর্ঘটনা
কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে অনিয়ন্ত্রিতভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ রেন্ট বাইক। দ্রুতগতি ও হেলমেটবিহীন হওয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এই বাইক নিয়ে দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যাও কম নয়৷

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে প্রতিদিন বেড়াতে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। এসব পর্যটকদের ঘিরে বিভিন্নভাবে ব্যবসা করছেন স্থানীয়রা। এমনই একটি ব্যবসা ‘পর্যটকদের জন্য রেন্ট বাইক সার্ভিস’। তবে সামান্য দুর্ঘটনার কারণে মোটরসাইকেলের কোনো ক্ষতি হলে পর্যটকদের জিম্মি করে রাখা হয় অতিরিক্ত টাকা। এছাড়া নানাভাবে লাঞ্ছনা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেক পর্যটক।

কলাতলী ডলফিন মোড়, সুগন্ধা পয়েন্টে ও মেরিন ড্রাইভ সড়কের বেশ কিছু স্থানে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল ভাড়া দেওয়া হয়। এসব মোটরসাইকেল ঘণ্টাপ্রতি ভাড়া নেওয়া হয় ২০০-৩০০ টাকা। পর্যটকরা সমুদ্রে বেড়াতে এসে অনেকে শখের বসে, অনেকে আবার শেখার জন্য এসব জায়গা থেকে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে থাকেন। তবে এতে এভাবে মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি। হেলমেটবিহীন অপরিচিত জায়গায় এসে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন পর্যটকরা। অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন, অনেকে আবার পঙ্গুত্ব বরণ করে নিচ্ছেন আজীবনের জন্য।

এসব বাইকের অনুমোদন না থাকলেও মেরিন ড্রাইভ রোডে অবৈধ বাইক দিয়ে রমরমা বাণিজ্য করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এসব বাইকের অধিকাংশ চালকই অদক্ষ। তাই প্রায় সময় এসব বাইক নিয়ে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়ে আসছে।

স্থানীয়রা বলছেন, দিনের পর দিন পর্যটন শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এসব অবৈধ যানবাহনের বাণিজ্য চলে আসলেও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব বন্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ‘রেন্ট বাইক সার্ভিসের’ কারণে গত এক বছরে অন্তত ১০ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। বিশেষ করে স্থানীয় তরুণ-তরুণী ও পর্যটকরা এসব মোটরসাইকেল বাইক ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করেন। নিরিবিলি সড়ক হিসেবে তারা মেরিন ড্রাইভ বেছে নেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, অবৈধ রেন্ট বাইক ব্যবসা বন্ধ করা উচিত। এই বাইকের কারণে শতশত তরুণ-তরুণী অকালে প্রাণ হারাচ্ছে।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সমির শাহা বলেন, মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে মেরিন ড্রাইভ ঘুরতে গিয়ে পড়ে যাই। এতে মোটরসাইকেলের সামান্য ক্ষতি হওয়ায় আমাকে জরিমানা গুণতে হয়েছে দ্বিগুণ টাকা। এছাড়া এখানে এসে যেমনটি বুঝলাম, বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পর্যটকদের জিম্মি করে তারা টাকা আদায় করে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রেন্ট বাইক সার্ভিসের কারণে প্রতিনিয়ত প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এসব রেন্ট বাইক বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এই বিষয়ে প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।

বিআরটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উথোয়াইনু চৌধুরী বলেন, কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যায় না। রেন্ট বাইক সার্ভিসের নামে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ভাড়া দেওয়া অবৈধ। আমরা এর আগেও বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি এবং জরিমানাও করেছি। তবে অভিযান শেষ হলে আবার শুরু করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই বিষয়ে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে।

কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রেন্ট বাইক ব্যবসায়ীদের হেলমেট পরিধান ও লাইসেন্সের বিষয়ে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু অনেকে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত

তিন ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড উখিয়ায় খোলাবাজারে টিসিবি পণ্য জব্দ করলেন ইউএনও

কক্সবাজারের উখিয়ায় খোলাবাজারে অবৈধভাবে বিক্রি করা টিসিবি পণ্য জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার ...

‘সৈকত ও ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’ নামে আরও এক জোড়া ট্রেন পাচ্ছে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীরা

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের যাত্রীরা পাচ্ছেন আরও এক জোড়া ট্রেন। পাশাপাশি স্থায়ী করা হচ্ছে বর্তমানে চলাচলরত বিশেষ ...