কক্সবাজারের টেকনাফে গোপন বৈঠককালে উপকূলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়া থেকে আটক আরএসও নেতা হাফেজ সালাউল ইসলাম সহ ৩ জনকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।১লা আগস্ট সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তৌহিদুল ইসলাম তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের কোর্ট ওসি রনজিৎ পালিত জানান,টেকনাফে সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় আটক আরএসও নেতা সালাউল ইসলাম, ঢাকার মৌলভী ইব্রাহিম ও টেকনাফ শামলাপুর দারুল ইসলাম মাদ্রাসার সভাপতি মৌলভী সৈয়দ করিমকে সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে বিচারক শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে কড়া নিরাপত্তায় টেকনাফ বিজিবি রোববার রাত ১২টায় সৌদি নাগরিককে বাদ দিয়ে সালাউল সহ তিনজনকে টেকনাফ থানায় সোপর্দ্য করে ১১ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে বিজিবি। মামলা নং ৮৮।
এই মামলায় আসামীদের মধ্যে দুই সহোদর বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক উদ্দিন, বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মৌলভী আজিজ উদ্দিন, আরএসও নেতা মাষ্টার আইয়ুব সহ ৮ জন পলাতক ।
এব্যাপারে টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল মজিদ জানান সোমবার সকালে সালাউল সহ তিনজনকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।বাকী আটজনপলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে টেকনাফে বিজিবি হেফাজতে আটককৃতদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রথমে তাদেরকে আলাদা আলাদা ভাবে,আবার পরে ৪ জনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।রবিবার সকাল থেকে টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল মজিদ সহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে আসা যাওয়া করতে দেখা যায়।
অপরদিকে ধৃত সৌদি নাগরিককে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজিবি।
উল্লেখ্য গত শনিবার টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় মৌলভী সৈয়দ করিমের বাড়িতে বিদেশী নাগরিক সহ গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযান চালায় বিজিবি ও পুলিশ। এসময় এক সৌদি নাগরিকসহ ৪ জনকে আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে সৌদি নাগরিক আহমদ আল সালেহ আল বাদি, আলোচিত আরএসও নেতা সালাউল ইসলাম, ঢাকার মৌলভী ইব্রাহিম ও টেকনাফ শামলাপুর দার”ল ইসলাম মাদ্রাসার সভাপতি মৌলভী সৈয়দ করিম রয়েছে।
এদের মধ্যে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) নেতা ছালাউল ২০১৪ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার এক পাকিস্তানিসহ পাঁচজনের মধ্যে ছিলেন। রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার ঘটনায়ও সম্পৃক্ততার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
এছারা ছালাহুল ইসলাম মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের আর্থিক সহযোগিতায় কক্সবাজার সরকারি কলেজের পেছনে পাঁচ একর পাহাড়ি জমিতে (দক্ষিণ মুহুরীপাড়া) একটি ইমাম মুসলিম সেন্টার নামে ব্যয়বহুল মাদ্রাসা তৈরি করেন। তিনি ওই মাদ্রাসার পরিচালকও।
এদিকে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে জনৈক সৌদি দানবীর বাহারছড়া এলাকায় একটি হেফজখানা ও এক উন্নতমানের ভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় দাতা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক চলছিল। অনুমতি বিহীন এই বৈঠকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে উপরোক্তদের আটক করে।
এসময় এক তুর্কী নাগরিকসহ ৪/৫জন লোক পালিয়ে যায়। এই ঘটনাটি জঙ্গি আটকের খবর হিসেবে ভাইরাল হয়ে সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সারাদেশ ব্যাপী হৈ ছৈ পড়ে যায়।