কক্সবাজারে হত্যা মামলায় এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং দুই আসামিকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) কারাদণ্ড দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত । যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামিদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
সোমবার (৭ আগস্ট) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
তিনি জানান, আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামি হলো, কক্সবাজারের চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের উত্তর খিলছাদক গ্রামের মোজাহের আহমদের পুত্র আনোয়ার হোসেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামিরা হলো, একই এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে জমির উদ্দিন এবং আলী আকবর। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডিত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে তিনি জানান, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের উত্তর খিলছাদক গ্রামের জমিতে একই এলাকার মোহাম্মদ হোছন রবিশস্যের কাজ করার সময় জমি জমা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে আনোয়ার হোসেন, জমির উদ্দিন এবং আলী আকবর তার উপর হামলা করে। হামলায় মোহাম্মদ হোছন ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ হোছনের ভাই ছিদ্দিক আহমদ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর : ০৫/২০১৩ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৫০৮/২০১৩ ইংরেজি (চকরিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ২০৯/২০১৬ ইংরেজি।
বিচার ও রায়:
মামলাটি তদন্ত করে ৩ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ এনে ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন। চার্জশীটে অভিযুক্তরা হলো আনোয়ার হোসেন, জমির উদ্দিন এবং আলী আকবর।
মামলাটি ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট আদালতে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, সাক্ষীদের আসামি পক্ষে জেরা, সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট যাচাই, আলামত পর্যালোচনা, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলাটি রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।
রায় ঘোষণার দিনে আসামি আনোয়ার হোসেন এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ১৮৬০ সালের ফৌজদারী দণ্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আসামি জমির উদ্দিন এবং আলী আকবরকে যাবজ্জীবন (৩০ বছর) করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামিদের একইসাথে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অর্থদণ্ড অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন (পিপি) এডভোকেট ফরিদুল আলম। আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম-৪, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।