এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজারঃঃ
কক্সবাজারের টেকনাফ ও মহেশখালীতে একই সাথে ২ আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাতে পৃথক এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত এক জন টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি মেম্বার সিরাজুল ইসলাম ও অপর জন হচ্ছে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি বর্তমান মেম্বার ’আব্দুল গফুর প্রকাশ নাগু ।
জানা যায়, টেকনাফ উপজেলা সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক ইউপি মেম্বার সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে রোববার দিবাগত রাত দেড়টায় দূর্বৃত্তরা ঢুকে তার উপর অতর্কিত গুলি চালায়।
পরিবার সুত্রে জানায়, দেড়টার দিকে মুখোজধারী কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে সিরাজ মেম্বারকে গুলি করে। এসময় তার স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তারও গুলিবিদ্ধ হন।
খবর পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশের এসআই কাঞ্চন কান্তি দাশের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে সিরাজ মেম্বারকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক সিরাজ মেম্বারকে মৃত ঘোষনা করেন।
এছাড়া তার স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি আবদুল মজিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী সোনাদিয়ার আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গফুর প্রকাশ নাগু মেম্বারকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাত ১০টায় স্থানীয় পূর্বপাড়া মসজিদ থেকে তারাবির নামাজ শেষে বের হওয়ার পথে তাকে খুব কাছ থেকে প্রথমে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাত ১০ টার দিকে সোনাদিয়া পূর্বপাড়া মসজিদ থেকে তারাবিহ’র নামাজ পড়ে বের হন আব্দুল গফুর প্রকাশ নাগু মেম্বার। ওই সময় ৪/৫ জনের অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ করে খুব কাছ থেকে গুলি ছুড়ে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মাটিতে লুটে পড়লে ধারালো দা দিয়ে তার মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয় লোকজন রাত সাড়ে দশটায় আহত নাগু মেম্বারকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে মহেশখালী গোরকঘাটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনার পথে তিনি মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আব্দুল গফুর প্রকাশ নাগু মেম্বার কুতুবজোম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড (সোনাদিয়া) থেকে এর পরপর চারবার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কুতুবজোম ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং আগরতলা ষঢ়যন্ত্রমুলক মামলায় পলাতক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন।
কুতুবজুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুর্বৃত্তরা নাগু মেম্বারকে গুলি ও কুপিয়েছে এটা শুনেছি। তবে কারা, কি কারণে গুলি করেছে, তা স্পষ্ট বলতে পারেননি।
তবে নিহত নাগু মেম্বারের পারিবাইরক সুত্র জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনই এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) বাবুল চন্দ্র বণিক জানান, গুলিবর্ষনের ঘটনা শুনে সোনাদিয়ায় যাওয়ার জন্য পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তবে সাগর উত্তাল থাকায় পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নাগু মেম্বার হত্যা কান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।
মৃত দেহ দুটি ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মগে রাখা হয়েছে।
পাঠকের মতামত