কক্সবাজার প্রতিনিধি::
কক্সবাজারে গত চারদিন ধরে চলা টানা বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মাটি দূর্বল হয়ে পড়েছে। গতকাল বিকাল থেকে বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। দিনরাত থেমে থেমে চলা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের এ বৃষ্টিপাতে দূর্বল হয়ে পড়া পাহাড়গুলোতে এখন বড় ধরনের ধসের আশঙ্কা করছেন সংশিহ্মষ্টরা। তারা বলছেন, ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে, ছোট ছোট পাহাড় ধস তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় গত চারদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সুর্যের মুখ দেখা যায়নি। এরই মাঝে সোমবার বিকাল থেকে শুরু হয়েছে ছোট ছোট পাহাড় ধস। গতকাল শহরের ঘোনারপাড়া, বৈদ্যঘোনা, কলাতলী, পাহাড়তলী, শহরতলীর দরিয়ানগর, কলাতলী, ইসলামনগর, লারপাড়া, সদরের ঝিলংজা, পিএমখালী, ঈদগাঁও, ভারুয়াখালী, রামুর খুনিয়াপালং, কাউয়ারখোপ, রশিদনগর, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, গর্জনীয়া, মহেশখালীর ছোট মহেশখালী, কালামারছড়া ও শাপলাপুর, চকরিয়ার ডুলাহাজারা, খুটাখালী, মানিকপুর, ফাঁসিয়াখালী, উখিয়ার জালিয়াপালং, ইনানী, কুতুপালং, বালুখালী, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, হোয়াইক্যং ও হ্নীলাসহ বিভিন্নস্থানে ছোট ছোট পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্য দর্শীরা জানান, গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় বৃষ্টি কিছু ণের জন্য থামলে দরিয়া নগরে বানরের পাহাড়ে প্রায় ৭০ ফুট উঁচু থেকে পর পর বড় বড় কয়েক টুকরা মাটি বিকট শব্দে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি ছড়ায় ধসে পড়ে। এসময় আশেপাশের বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতবছর উপর্যপুরি ভূমিকম্পের ফলে বানরের পাহাড়ে ফাটল ধরেছিল। এছাড়া দরিয়া নগর ও মেরিন ড্রাইভসহ কক্সবাজারের বিভিন্নস্থানের অধিকাংশ পাহাড় ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব পাহাড়ে রয়েছে হাজার হাজার বসতি। যে কোনো সময় পাহাড় ধসের ভয়াবহতার শিকার হতে পারে এসব পাহাড়ের বাসিন্দারা। গত মাসের মাঝমাঝি সময়ে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পাহাড় ধসে প্রায় দুইশ’ মানুষের প্রাণহানির পর কক্সবাজারে প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে বসতি সরানোর কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ঈদের ছুটি ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বর্তমানে এসব কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে গতকাল সারাদিন পৌরসভার উদ্যোগে মাইকিং করে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘টানা বর্ষণের কারণে কক্সবাজারে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেড়েছে। জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।’ কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যেতে বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপরও কেউ সরে না যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অতি ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে এ কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলে জনগণকে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।’
পাঠকের মতামত