কক্সবাজারের চকরিয়ায় মুর্শেদ আলম নামের এক কলেজ ছাত্রকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত কলেজ ছাত্র চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম সওদাগর ঘোনার জহির আহমদের পুত্র। সে চকরিয়া ডুলাহাজারা কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। চিরিঙ্গা ইউনিয়নের পালাকাটা রাবার ডেম এর নিকট মাতামুহুরী নদীর চর থেকে আজ রবিবার সকাল ৮টায় চকরিয়া থানার পুলিশ গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে।
চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদাগর ঘোনার বাসিন্দা বৃদ্ধ জহির আহমদ জানান, তার পুত্র মোর্শেদ আলম(২০) ডুলাহাজারা কলেজে অধ্যয়নরত বিজ্ঞান বিভাগের একজন মেধাবী ছাত্র। গরীব পরিবারের অভাব পুরনের জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পাশ্ববর্তি চিংড়ী ঘের ও জেলেদের কাছ থেকে কাকড়া ক্রয় ও বিক্রি করে আয়কৃত টাকা দিয়ে পরিবার ও নিজের খরচ চালিয়ে আসছিল।প্রতিদিনের ন্যায় তার পুত্র গতকাল ২৮মে দিবাগত রাত ৮টার দিকে কাকড়া ক্রয়ের উদেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে রাবারডেম এলাকায় যায়।পরদিন ২৯শে মে সকালে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি গিয়ে দেখেন নদীর চরে তার পুত্রের গলাকাটা নিথর দেহ পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে চকরিয়া থানার এস আই আনোয়ার সঙ্গিয় পুলিশ দল নিয়ে আজ সকাল ৮টায় উদ্ধার করেন।পরে ময়নাতদন্তের মর্গে প্রেরন করেন।
উলেখ্য, নিহত মোর্শেদ আলমের মেঝভাই খোরশেদ আলমকে একইভাবে জবাই করে হত্যা করেছিল ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সওদাগরঘোনা বটতলী এলাকার নাছির ও জালাল বাহিনী।নিহত কলেজ ছাত্র মোর্শেদ আলম তার মেঝ ভাইয়ের হত্যা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিল।সাক্ষি হওয়ায় সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটায় বলে নিহতের পিতা সাংবাদিকদের জানান।
অপরদিকে একটি সুত্র জানায়, সওদাগরঘোনার নাছির ও জালাল এবং তাদের সঙ্গীয় ডুলাহাজারা পুর্বডুমখালী গ্রামের লম্বা বেলাল ও ফরিদের পুত্র সরওয়ার এবং জাফরের পুত্র হেলাল সহ ২৫/৩০জনের সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত তাদের নিজস্ব ১৫ অশ্ব শক্তি সম্পন্ন একটি ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে বিভিন্ন চিংড়ীঘেরের মালিক-শ্রমিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চিংড়ী মাছ,কাকড়া,ঘেরে পালিত গবাদিপশু লুট করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে। এমনকি লুটের অধিকাংশ মালামাল সওদাগর ঘোনার ঘাটে খালাস করে থাকে। ওইসব লুটের মাল খালাসকরার সময় সম্ভবত কলেজ ছাত্র মোর্শেদ দেখে ফেলার কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে।এ ছাড়া ঘেরের মালিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট মাসোহারা ও আদায় করে আসছে ডাকাতরা।এ অপরাধী চক্রের সদস্যদের সাথে কতিপয় রাজনীতিক নেতা, পথভ্রষ্ট কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সরকারী আমলার রয়েছে দহরম মহরম।
সূত্র আারো জানায়, ডাকাতির সিংহভাগ আয়ের টাকা কতিপয় রানীতিক নেতা, পুলিশ ও সরকারী আমলার পকেটে যায় বিধায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের গ্রেফতার কিংবা বড় ধরনের মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করে।এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ডাকাতদের ব্যবহারের ইঞ্জিন চালিত বোট,অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার সহ সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন। তাদের গ্রেফতার করা হলে হত্যা,ডাকাতি ও লুটতরাজ কিছুটা হলেও বন্ধ হবে বলে জানিয়েছেন চিংড়ী চাষিরা।