সৈয়দুল কাদের :
কক্সবাজারের দুইটি আসনে জামায়াত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিএনপি। যেকোন একটি আসনে নির্বাচন থেকে ছিড়কে পড়তে পারে বিএনপি। ওই একটি আসন বিএনপি থেকে ভাগিয়ে নিতে নানা মূখী চাপ প্রয়োগ করছে জামায়াত।
কক্সবাজারের ৪টি আসন থেকে একটি আসনে (স্বতন্ত্র) নির্বাচন করবে জামায়াত। বিএনপি ওই আসনে জামায়াতের (স্বতন্ত্র) প্রার্থীকে সমর্থন দেবে এটি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের এক শীর্ষনেতা। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক সাংসদ হামিদুর রহমান আজাদ ইমেজ সংকটে থাকলেও কক্সবাজার-২ আসনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করবেন। আইনগত জটিলতায় তিনি নির্বাচন করতে না পারলে ওই আসনে জামায়াতের বিকল্প প্রার্থী নির্বাচন করবেন। তিনি আরো জানান, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দাড়িপাল্লা প্রতীক পাচ্ছে না জামায়াত। তারপরও জামায়াত প্রার্থী কোন ভাবেই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন না। এতে জামায়াতের জনসমর্থন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষ মনে করবে জামায়াত হয়তোবা বিএনপিতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া কক্সবাজার সদর আসনটি জামায়াতের চাহিদায় রয়েছে। জোটের সভায় এটি সিদ্ধান্ত হবে। তবে সদর আসনে রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে বিএনপিকে চাপে রাখবে জামায়াত। কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে জামায়াত। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছে জামায়াত। এ কারণে জামায়াতের দাবী রয়েছে এ আসনটিও। তবে কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াত প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
এদিকে জামায়াত নিয়ে টেনশানে পড়েছেন বিএনপির নেতারা। ইতোমধ্যে কক্সবাজার-২ আসনে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ভাবে জামায়াতের সমালোচনায় মুখর। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী তার ফেইসবুকে এডঃ খোরশেদ আলম চৌধুরীর একটি স্ট্যাট্যাস শেয়ার করেছেন, এতে তিনি লিখেছেন যারা কচ্ছপের মত সুবিধা দেখলে মুখ বের করে আর অসুবিধা দেখলে মুখ ডুকিয়ে রাখবে এমন রাজনৈতিকরা জনগণের মঙ্গল চায় নাকি ক্ষমতার জন্য ওঁত পেতে আছেন। ওই স্টেট্যাসটি জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদকে লক্ষ্য করে দিয়েছেন বলে একাধীক বিএনপি নেতা জানিয়েছেন। এরপর বিএনপি থেকে নুরুল বশর চৌধুরীই প্রধান মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক সাংসদ বিএনপির কেন্দ্রিয় সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ। তিনি মনোনয়ন পাবেন এমন আশাবাদী তার সমর্থকরা। উপজেলা বিএনপির নেতা হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের সিকদার জানিয়েছেন, কক্সবাজার-২ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হিসাবে আলমগীর ফরিদের বিকল্প নেই। তিনি পরপর দুইবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। মনোনয়ন পেলে নিশ্চিত বিজয়ী হবেন। বেগম খালেদা জিয়া তাকে কেন্দ্রিয় সদস্য হিসাবে মনোনীত করেছেন। মহেশখালী-কুতুবদিয়ার বিএনপি আলমগীর ফরিদের প্রতি আস্থাশীল।
অপরদিকে কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সাথে আলমগীর ফরিদের বিরোধ থাকায় সম্প্রতি কেন্দ্রিয় নেতাদের উপস্থিতিতে প্রতিনিধি সভায় যোগদানের জন্য তিনি সম্মতি পাননি। তবে কেন্দ্রিয় নেতাদের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলেছেন আলমগীর ফরিদ ও তার অনুসারিরা।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায় কক্সবাজার জেলার ৪টি আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদের সম্মতির উপর নির্ভর করবে। আলমগীর ফরিদ সালাহ উদ্দিন আহমদ’র বিরাগভাজন হওয়ায় দলের মনোনয়ন পাওয়া কঠিন।
জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী জানিয়েছেন, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। দলের মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে নিশ্চিত করবে। সালাহ উদ্দিন আহমদ আমাদের অভিভাবক তাই তার মতামত অবশ্যই প্রাধান্য পাবে।