কক্সবাজারের চকরিয়ায় চাঞ্চল্যকর সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩) হত্যা মামলার ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের চার মাস পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) উপজেলা জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ডাকাত প্রতিরোধে যৌথবাহিনীর অভিযানে গিয়ে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাতে নিহত সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা।
চকরিয়া আদালতে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডে তদন্তে পুলিশ ১৮ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে। ১৮ জনের বিরুদ্ধেই তদন্তকারী কর্মকর্তা রবিবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। এরমধ্যে অভিযোগপত্রে নাম থাকা ১২ আসামি গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। আরও ৬জন আসামি পলাতক রয়েছেন। ইতোমধ্যে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
পুলিশ পরিদর্শক আরও জানান- সেনা কর্মকর্তা তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যাকান্ডের ঘটনায় ডাকাতির প্রস্তুতিসহ হত্যা ও অস্ত্র আইনে থানায় র্পথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি ডাকাতির প্রস্তুতি ও হত্যাকান্ড অপরটি অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। দুই মামলাতেই ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে পলাতক ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ও মালামাল ক্রোকের পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী জানান, সেনা কর্মকর্তা তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যাকান্ড ও ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়। ডাকাতির প্রস্তুতিসহ সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল হারুনুর রশিদ বাদি হয়ে ১৭ জনের নামোল্লেখ করে মামলা করেন। একই সঙ্গে থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আলমগীর বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অরূপ কুমার চৌধুরী আরও জানান- সেনা কর্মকর্তা হত্যায় যে ১৭ জনের নামে মামলা করা হয়েছিল সেখান থেকে এই হত্যাকান্ডে ৬ জনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্রে। আবার ব্যাপক তদন্তে বের হয়ে আসে এজাহারের বাইরে থাকা আরও ৭ জনের নাম। সেই ৭ জনসহ সর্বমোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতিসহ হত্যা ও অস্ত্র আইনে হওয়া পৃথক মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে চকরিয়া উপজেলা ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বসত বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাত প্রতিরোধ অভিযানে গিয়ে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন নিহত হন। এ সময় যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে তিন ডাকাতকে আটক এবং তাদের ফেলে যাওয়া দেশে তৈরি একটি বন্দুক, ৬টি গুলিও উদ্ধার করে। লেফটেন্যান্ট তানজিমের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ২০২২ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।
পাঠকের মতামত