প্রকাশিত: ০৩/১০/২০১৬ ৯:৩৮ এএম

এম.বেদারুল আলম:: অভিবাসির ঘামের টাকা,সচল রাখবে দেশের চাকা।বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে কক্সবাজার জেলার ৫৮ হাজার ৭শ ৪৮ জন শ্রমিক।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে জেলার ৫৮,৭৪৮ জন শ্রমিক কর্মরত আছে।

এদের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব,আরব আমিরাত, মালয়শিয়া,ওমান, কাতারে কর্মরত রয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিক। জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রমিয়ন কান্তি দাশ উপরোক্ত তথ্য জানান।

জানা যায়,কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলায় এ পর্যন্ত(সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন পেশার ভিসা নিয়ে ৫৮,৭৪৮ জন শ্রমিক বিদেশে গেছেন।এদের মধ্যে পূরুষ শ্রমিকের সংখ্যা ৫৭,৬২৬ জন এবং মহিলা শ্রমিকের সংখ্যা ১১২৬ জন।সবচেয়ে বেশি কক্সবাজার জেলা থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রডিমক প্রেরণ করা হয়েছে ২০১২ সালে।সে বছর ১২ হাজার ৮শ ৬১ জন পূরুষ এবং ৮৫ জন মহিলা সৌদিআরব,আরব আমিরাত,ওমান এবং মালয়শিয়া গেছেন।তবে সবচেয়ে বেশি মহিলা শ্রমিক প্রেরণ করা হয়েছে গত বছর।

উক্ত ২০১৫ সালে বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যকার একটি চুক্তির মাধ্যমে স্বল্প খরচে গৃহকর্মী পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় ৬৩৮ জন মহিলা সৌদি আরবে যাওয়ার সুযোগ পায়। উক্ত মহিলাদের সেখানে কর্মরত অবস্থায় নিয়োগ কর্তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি সহ মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠলেও বর্তমানে অনেকে এখনো ভাল অবস্থানে রয়েছে বলে জেলার জনশক্তি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে কক্সবাজার জেলা থেকে গত ছয় বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে শ্রমিক প্রেরণের তথ্য প্রকাশ করেছে জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস।

তথ্য অনুয়ায়ী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে শ্রমিক প্রেরণ করা হয়েছে ২০১১ সালে ৯৬৩৫ জন পূরুষ ও ৩৮ জন মহিলা,২০১২ সালে ১২৮৬১ জন পূরুষ ও ৮৫ জন মহিলা,২০১৩ সালে ৩০২৫ জন পূরুষ ও ১২২ জন মহিলা,২০১৪ সালে ৩১৫৪ জন পূরুষ ও ১৭৩ জন মহিলা,২০১৫ সালে ৩৬৮৪ জন পূরুষ ও ৬৩৮ জন মহিলা এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২০৫ জন পূরুষ ও ৫২৮ জন মহিলা শ্রমিক রয়েছে।

এবছর শেষ নাগাদ বিদেশ যাওয়ার শ্রমিকের সংখ্যা ২০১৫ সালকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত দেন জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রমিয়ন কান্তি দাশ। অপরদিকে ২০১৫ সালে স্বল্প খরচে জি টু জি পদ্বতিতে মালয়শিয়ায় শ্রমিক প্রেরণের খবরে জেলা জনশক্তি অফিসে শ্রমিক নিবন্ধনের জন্য ঢল নামে বিদেশগমন প্রত্যাশিদের।

শহরের আদালত পাড়ার জনশক্তি অফিসের নিবন্ধনকারীদের সামলাতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সে সময় সাড়ে ১৩ হাজার বেকার যুবক মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য অনেক কষ্টের বিনিময়ে নিবন্ধিত হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সাড়ে ১৩ হাজার বেকার যুবকের মধ্যে মাত্র ১৫৩ জনের জন্য ভিসা প্রেরণ করে মালয়েশিয়ান সরকার।

তবে ১২৯ জনই যাওয়ার সুযোগ পায়।বাকিরা অদ্যাবধি মালয়েশিয়া যেতে পারেনি আইনি জটিলতার কারনে।

সেসময় সাড়ে ১৩ হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বরাবরে ২০০ টাকা করে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ২৭ লক্ষ টাকা গ্রহন করলেও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ মেলেনি হতভাগ্য বেকার যুবকদের।

এ ব্যাপারে জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রমিয়ন কান্তি দাশ জানান,“আপাতত জি টু জি পদ্ধতিতে শ্রমিক প্রেরণ বন্ধ রয়েছে। শ্রমের বাজার উন্মুক্ত হলে নিবন্ধিতদের পর্যায়ক্রমে মালয়েশিয়ায় প্রেরণ করা হবে।তবে নিবন্ধিতরা ইচ্ছা করলে ভিসার মাধ্যমে যে কোন দেশে যেতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

নানা প্রতিকুলতা সত্বেও জেলার ৫৮,৭৪৮ জন শ্রমিক গঁতর খেঁটে দেশের অথনীতিকে সচল রাখছে।দেশকে সমৃদ্ধ ও এগিয়ে নিতে শ্রমিকদের রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।মধ্যপ্রাচ্য সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংকুচিত শ্রমের বাজার যদি উন্মুক্ত করা হয় দেশ আরও এগিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

পাঠকের মতামত

অভিভাবকহীন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা’র সীমান্তঘেষা ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ’র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি’দের মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে গত নভেম্বর ...