শাহপুরী হাইওয়ে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে কক্সবাজার -টেকনাফ সড়কে গাড়ি থামিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। রাতে ছাড়াও দিনে চেকপোস্ট বসিয়ে শাহপুরী থানা পুলিশের সামনে প্রতিটি গাড়ি থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন সড়কে চলাচলকারী চালকরা।
নির্ভরযোগ্যসূত্রে জানা যায়, রাতের বেলায় পণ্যবাহী ট্রাক,ডাম্প ট্রাক,সিএনজি, মাইক্রো, রোহিঙ্গাদের ৩ শতাধিক টমটম অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গাড়ি আটক করে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় হাইওয়ে পুলিশ। প্রতিদিন এভাবে বৈধ কাগজপত্র না থাকার অভিযোগ তুলে গাড়িগুলোর মালিক ও চালকদের মামলার ভয় দেখিয়ে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন তাঁরা। এতে নিরুপায় হয়ে চালকরা টাকা দিয়ে গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে নিয়মিত যাতায়াত করা ট্রাক চালক ছালেহ আহামদ বলেন, আমি প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন মালামাল নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাই। কিন্তু শাহপুরী হাইওয়ে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও হয়রানিতে অতিষ্ঠ আমার মতো শত শত ট্রাক চালক। রাতে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ সড়কে ঢোকার পর থেকে হাইওয়ে পুলিশ,কাস্টমস,ট্রাফিক পুলিশ সবাইকে সড়কে চাঁদা দিতে হয়। একাধিক পয়েন্টে বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করে পুলিশ। চাঁদা দিতে অপারগ হলে গাড়ি আটক করে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হয়। গাড়ি আটক করলেও মামলা না দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পরিবহন দালালদের মধ্যস্ততায় টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় গাড়ি।
স্থানীয় সিএনজি চালক রফিক উদ্দিন বলেন, শাহপুরী হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুল কবির যোগদান করার পর থেকেই হয়রানি আর চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হাইওয়ে থানা পুলিশ। ওসির নির্দেশনায় শাহপুরী থানার সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে একাধিক পুলিশ সদস্য চালকদের জিম্মি করে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছি আমরা। শুনেছি বর্তমান হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুল কবির দীর্ঘদিন উখিয়া থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত থাকার সুবাদে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । বিভিন্ন দলের নেতাদের সাথেও তার সম্পর্ক থাকার কথা শোনা যায়। ফলে চাঁদাবাজি করলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না।
এদিকে পুলিশ একটি ট্রাক গাড়ি থামিয়ে চালকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে ভুক্তভোগীদের বলতে দেখা যায়, প্রতিদিন এভাবেই চলছে গাড়িগুলো, প্রতিটি গাড়ি থেকে হাইওয়ে পুলিশ, কাস্টমসসহ বিভিন্ন সংস্থার টাকা নেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে ভিডিওতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নেতা অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ ও কাস্টমসের চাঁদাবাজির কারণে অনেকে পরিবহন ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। সব কাগজ পত্র ঠিক থাকলেও চাঁদা না পেলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিক নামধারী পতিত আওয়ামী লীগ সরকারে ঘাপটি মেরে থাকো কিছু দালালদের মাধ্যমে হাইওয়ে পুলিশ, কাস্টমস এসব চাঁদাবাজি করছে বলে আমাদের কাছে প্রায় অভিযোগ আসে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহপুরী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুবুল কবির বলেন, যে সকল অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। তবে তিনি এও বলেন যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার কি কোন প্রমাণ আপনার কাছে রয়েছে।