সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
পর্যটন পরিবেশ রক্ষায় কক্সবাজারের দুটি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র স্থানান্তর করার পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করলেও বিভিন্ন আইনি জঠিলতা সহ নানাবিধ কারনে সরকার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেনা। দ্বায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে,রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা দু,একটি প্রভাবশালী এনজিও সংস্থার অনিহাসহ বেশ কিছু আইনি জটিলতার কারনে সরকার আপাততঃ কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ফলে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচারণ ও নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের ফলে কক্সবাজারের পর্যটন পরিবেশ ভারী হয়ে উঠছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় এলাকার সার্বিক পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল।
উখিয়া ও টেকনাফের দুটি শরণার্থী ক্যাম্পে ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসলেও সঠিক পরিসংখ্যান কারো জানা নেই। এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সহ বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে উখিয়া, টেকনাফ দুই উপজেলায় গঠিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন করা হলেও তা ফলপ্রসু হয়নি। নিয়ন্ত্রণহীন এসব রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইয়াবা পাচার,জঙ্গি কার্যত্রুম,অস্ত্র ব্যাবসা, চোরাচালান, পতিতাবৃত্তি, চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে যুক্ত হওয়ায় পর্যটন শহর কক্সবাজারের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে দেশে-বিদেশে।২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, কক্সবাজারের দুটি শিবিরে রোহিঙ্গারা মানবেতর দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। মানবিক কারণে তাদের প্রশস্ত স্থানে বসবাস করার সুযোগ করে দেওয়া দরকার। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসন হাতিয়াদ্বীপের পূর্বাঞ্চলের চরটি স্থান রোহিঙ্গাদের জন্য নির্বাচন করে দেয়। স্থানীয়ভাবে ঠেংগার চর নামে পরিচিত ওই এলাকায় বন বিভাগের ১২ হাজার একর জমি রয়েছে। এ সময় নোয়াখালী জেলা প্রশাসন উক্ত জায়গা সার্ভে করে ৫শ একর জমি অধিগ্রহণ করার জন্য বন মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। তার আলোকে বন মন্ত্রণালয়ের জায়গা বুঝে নেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি নির্দেশনাও দেওয়া হয়।কিন্ত স্থানীয় এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ স্থগিত হয়ে গেছে। তাছাড়া বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের কারনে স্থানান্তর কার্যত্রুম প্রত্রিুয়া থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। এদিকে রোহিঙ্গাদের অন্যত্র স্থানান্তরের প্রত্রিুয়া বন্ধ হয়ে যাওযার খবরে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের সাথে আলাপ করে যায় যায়। যদিও বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের আটক করে খাদ্য ও মানবিক সেবা দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। স্থানীয় গ্রামবাসীর দাবী, বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গারা কুতুপালং বস্তি, নিবন্ধিত ক্যাম্প সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, এসব রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ার কারনে স্থানীয়ভাবে রোহিঙ্গা বিষফোড়ায় পরিনত হয়েছে।শুধুমাত্র রোহিঙ্গাদের কারনে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে উখিয়া টেকনাফের ৫ লক্ষাধিক মানুষকে।