সৈয়দুল কাদের ::
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে গত ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে কর্মরত চিকিৎসকদের চেম্বারে রোগী দেখার কার্যক্রম। প্রতি কার্য্য দিবসে বিকেল ৩টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত রোগী দেখবেন চিকিৎসকরা। গত ৪ দিনে প্রায় ১০৭ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের বর্হিবিভাগ ডাঃ আবদুল নুর বুলবুল ভবনেই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দ্রুত চিকিৎসা পেয়ে খুশী।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারের চেম্বারেই ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে ধীরে ধীরে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সার্জারি, মেডিসিন, গাইনী, শিশু, নাক-কান গলা ও দন্ত বিভাগেই বিভাগের চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন রোগীদের। অধ্যাপক ৫০০ টাকা, সহযোগী অধ্যাপক/সিনিয়র কনসালটেন্ট ৪০০ টাকা, সহকারী অধ্যাপক/ জুনিয়র কনসালটেন্ট ৩০০ টাকা ও এমবিবিএস/বিডিএস ২০০ টাকা করে।
উক্ত বিভাগের সুপার ভাইজার আল ফয়সাল ছিদ্দিকী জানিয়েছেন, প্রথম দিন ৯ জন রোগী হলেও দ্বিতীয় দিন ২৮ জন ও তৃতীয় দিন ৩১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ৪ তারিখ পৌনে ৫টা পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ফলে ধীরে ধীরে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা । ৪ দিনে রোগী এসেছেন শতাধিক। আশা করি, রোগীর সংখ্যা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে।
হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, একেকজন চিকিৎসক একেকদিন চেম্বার করবেন। এক চিকিৎসক প্রতিদিন বসবেন না। রোগীর সংখ্যা যদি বেশী হয় তখন বিকেল ৫টার অধিক সময় রোগী দেখবেন চিকিৎসকরা।
কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যাপক আবুল কালাম বলেন, দেশের স্বাস্থ্যক সেক্টরে এটি সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে মানুষের চিকিৎসা প্রাপ্তি অনেক সহজ হয়েছে। বিভিন্ন প্রাইভেট চেম্বারে উচ্চ ‘ফি’ দিয়েও চিকিৎসা নিতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। হাসপাতালের চেম্বারে প্রাইভেট রোগী দেখায় এখন চিকিৎসা পাওয়া অনেক সহজ হবে। প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসক আসতে অনেক সময় সন্ধ্যা ৬/৭ টা বেজে যায়। এছাড়া অনেক চিকিৎসক আছেন রাতেই প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করেন। এরা এখন নিজ কর্মস্থলে চিকিৎসা দেওয়ায় চিকিৎসা পাওয়া অনেক সহজ হয়েছে। প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা দেওয়া অনেক রোগীর বিভিন্ন প্যাথলজী রিপোর্ট সহজে দেখানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
চিকিৎসা নিতে আসা কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা ছাবেকুর নাহার জানিয়েছেন, তিনি গাইনী বিভাগের চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন। জানান, চিকিৎসক খুব ভাল করে উনাকে দেখেছেন এবং ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। এতে আমি সন্তুষ্ট। রোগীর সংখ্যা কম হওয়ায় অপেক্ষা করতে হয়নি। খুব দ্রুতই চিকিৎসা নিতে পেরেছেন।
প্যাথলজি রিপোর্ট দেখাতে এসেছেন মহেশখালীর মাতারবাড়ির আবু আহমদ। তিনি বলেন, প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ মার্চ। রিপোর্ট দেখানোর তারিখ ৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায়। সরকারি হাসপাতালে চেম্বার করায় ওই চিকিৎসকে বিকেল সাড়ে ৩টায় রিপোর্ট দেখানোর সুযোগ পেয়েছি। এখন আমি মাতারবাড়ি চলে যাচ্ছি। না হয় আজকে কক্সবাজার থাকতে হত। এখন চিকিৎসা নেওয়া অনেক সহজ হয়েছে।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোমিনুর রহমান জানিয়েছেন, এটি অত্যান্ত সুন্দর একটি পদক্ষেপ। প্রচার না হওয়ায় এখনো রোগীর সংখ্যা কম। এছাড়া রমজানের পরে রোগীর সংখ্যা আরো বাড়বে। একই সাথে প্রচারও বাড়বে। আশাকরি এই মহতী উদ্যোগ সফল হবে। রোগীরা দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাবে।