কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ। সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে সাপটি সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট ভেসে আসে।
সৈকতের পানি বিক্রেতা মনির সাপটি দেখতে পেয়ে একটি পলিব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে বীচকর্মীদের খবর দেন। পরে তারা বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তাদের খবর দিলে তারা সেটার নমুনা সংগ্রহের জন্য নিয়ে যান।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট এর সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার তরিকুল ইসলাম ধারণা করছেন, এ সাপের নাম yellow-lipped sea krait (Laticauda colubrina)।
তিনি জানান, এটি মূলত ল্যাটিকাউডা কলুব্রিনা বা হলুদ ঠোঁটযুক্ত সামুদ্রিক ক্রেইট, যা প্রাথমিকভাবে অগভীর উপকূলীয় পানি, প্রবাল প্রাচীর এবং উপহ্রদগুলোতে বাস করে। এটি সৈকতের পাথুরে অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং স্থলভাগেও দেখা যায়। এই প্রজাতি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিচরণ করে।
বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন এং টেকনাফ থেকে ইনানী অঞ্চলের কোরাল ও পাথুরে উপকূলে পাওয়া যায়। তাছাড়া এটি ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এবং পাপুয়া নিউ গিনির মতো দ্বীপের চারপাশের পানিতে পাওয়া যায়। ফিজি, টোঙ্গা এবং অন্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের মতো অঞ্চল ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন উপকূল পাওয়া যায়।
তিনি জনান, ল্যাটিকাউডা কলুব্রিনার বিষ রয়েছে, যা এটি তার শিকার ও প্রাথমিকভাবে মাছ এবং ইলকে দমন করতে ব্যবহার করে। বিষটি নিউরোটক্সিক হওয়ায় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। তবে এটি সাধারণত মানুষের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় না। সাপটির কামড় বিরল এবং যদিও সেগুলো বেদনাদায়ক হতে পারে এবং ফুলে যাওয়া ও বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গের দিকে নিয়ে যেতে পারে। কামড়ের ফলে মৃত্যুর ঘটনা অস্বাভাবিক। সাপটি নিয়ে বেশি আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানান এই বিজ্ঞানী।
এই সাপটি ঢেউয়ের তোড়ে সমুদ্রের তীরে চলে এসেছে এবং পানিতে স্রোত থাকায় গভীরে ফিরে যেতে পারছিল না বলে জানান তিনি।
গত বছর হাইড্রোফিস প্লাটুরাস (লিনিয়াস 1766) হলুদ-পেটযুক্ত সামুদ্রিক সাপ এবং হাইড্রোফিস সায়ানোসিক্টাস, যাকে সাধারণত অ্যানুলেটেড সি স্নেক বা নীল-ব্যান্ডেড সামুদ্রিক সাপ নামে দুটি প্রজাতির দেখা পাওয়া গিয়েছিল কলাতলী সৈকতে। যার নমুনা বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা আছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।