চলতি বছরেই চালু হচ্ছে দোহাজারী থেকে কক্সাবাজার পর্যন্ত রেলের মেগা প্রকল্প। রেলের এ মেগা প্রকল্প চালু হলে দেশের রেলের মানচিত্র যেমন পাল্টে যাবে তেমনি ট্রান্স এশিয়ান রেলরুটে যুক্ত হবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর ফলে কক্সবাজারের পর্যটন,যাতায়াত ও বাণিজ্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে উন্মোচন হবে বলে মনে করছেন রেল সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালু হলে সমুদ্র পিপাসুদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। বর্তমানে বাস বা বিমানে করে বহু কষ্ট ও অর্থ ব্যয় করে যাওয়ার ঝক্কি, খরচ ও সময় সাশ্রয় হবে। বাড়বে পর্যটন সম্ভাবনাও।
এদিকে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল প্রকল্পটি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মুফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের কাজ দুটি লটে হচ্ছে, প্রথম লট,দোহাজারী-রামু পর্যন্ত সব কাজই প্রায় শেষ। বাকি রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ আশা করছি জুন- জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করতে পারবো। প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ বলেও জানান তিনি।
মুফিজুর রহমান বলেন, প্রকল্পটির আওতায় ৯টি স্টেশনের মধ্যে ২টি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৭টির কাজ প্রায় শেষের দিকে। আর ১০০ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে ৬৫ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ শেষ, বাকি কাজ চলমান।
এছাড়া বনের মধ্য দিয়ে হাতি ও বণ্যপ্রাণী চলাচলের জন্য আণ্ডারপাসের কাজ শেষ। এখানে প্রায় ১৫ কি.মি. রেলপথ বসানোর কাজ চলমান। কার্লভাট, ব্রিজের কাজও শেষের পথে। কক্সবাজারে নির্মাণাধীন আইকনিক স্টেশনের কাজও প্রায় ৮৩ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের বেশ কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে বর্তমানে প্রকল্পটির মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ।
দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি গত ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের এই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন।
এসব বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, চলতি বছরের মধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবো। যার মধ্যে অন্যতম- দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার রেল প্রকল্প। এটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
প্রকল্পটি শেষ হলে ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারবেন ভ্রমণ পিপাসুরা। এটি মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম পর্যন্ত যাবে, এ বিষয়ে সেদেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। প্রকল্পটি শেষ হলে অতি অল্প সময়ে যাত্রীরা ঢাকার কমলাপুর থেকে চট্টগ্রাম- দোহাজারী হয়ে কক্সবাজার পৌঁছাবেন।
এতে একদিকে যেমন ভ্রমণ পিপাসুদের আর্থিক ও সময়ের সাশ্রয় হবে তেমনি আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে সংশ্লিষ্ট এলাকার। তিনি জানান, কক্সবাজারে একটি আইকনিক স্টেশন তৈরি হচ্ছে। এখানে লকারে জিনিষপত্র রেখে সমুদ্রসৈকতে নিরাপদে ঘুরে বেড়ানো যাবে। আবার রাতের ট্রেনে রাজধানীতে ফিরতে পারবেন।