অনলাইন ডেস্ক: মেয়ের পছন্দের পাত্রে বাবার আপত্তি ছিল না। সানন্দে রাজি হয়ে যান। কিন্তু, চাননি পড়াশুনো শিকেয় তুলে মেয়ে এখনই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়ুক। তাই দু-বছর অপেক্ষা করতে বলেছিলেন। সঙ্গে আরও একটা অপশন অবশ্য মেয়েকে দিয়েছিলেন। বিচ্ছেদ! শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় রাস্তাই উপযুক্ত মনে করে সেই পথেই পা বাড়ান সুরাতের কলেজপড়ুয়া তরুণী দিব্যা বোরখতারিয়া (২০)।
বাবা চেয়েছিলেন, ধৈর্য ধরতে না-পারলে ছেলেটির সঙ্গে মেয়ের ব্রেকআপ। মেয়ে সেই ব্রেকআপ-ই করলেন। তবে পরিবারের সঙ্গে, চিরদিনের মতো। স্থানীয় একটি বহুতলের ছাদে উঠে, মরণঝাঁপে নিজের জীবনের পাশে দাঁড়ি টেনে দিলেন। গোটা ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির স্কুটি থেকেই একটি সুইসাইড নোট পেয়েছে গুজরাত পুলিশ।
মা-বাবার উদ্দেশে সুইসাইড নোটে দিব্যা লিখেছেন, ‘তোমরা এতদিন যে আমাকে লালনপালন করেছ, এত বড় করে তুলেছ, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। এর পরই বাবাকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, তুমি আমাকে দুটো অপশন দিয়েছ। হয় বিয়ের জন্য দু-বছর অপেক্ষা করো, নয়তো ছেলেটির সঙ্গে ব্রেকআপ। বিয়ের জন্য দু-বছর অপেক্ষা করতে পারব না। অনেক দীর্ঘ সময়। তাই আমি নিজেই একটা অপশন বেছে নিয়েছি। এই চিঠিটি যখন তোমাদের হাতে পৌঁছবে, ততক্ষণে জেনে যাবে আমার অপশন কী ছিল। এর পর, ভাইকে লেখে ভাই তুই বড় হয়ে নাম করিস। মা-বাবাকে খুশি করিস। আমি তো পারলাম না! মায়ের এক কথা শুনে শুনে আমি ক্লান্ত। আমার মৃত্যুর পর অন্তিমক্রিয়ায় তোরা খরচ করসি না। সেই টাকায় গোয়ায় গিয়ে কয়েক পেগ খেয়ে নিস।’ চিঠির শেষ লাইন: লভ ইউ মামি, পাপা, ভাই।
পুলিশ জানায়, বিকম অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন দিব্যা। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে, ৬ মাস আগে একটি অফিসে ডেটা এন্ট্রির কাজ পেয়েছিলেন এই তরুণী। কলেজে পড়াশোনার সেই এই চাকরটিও করছিলেন। সেখানেই একটি ছেলের সঙ্গে আলাপ। আলাপ থেকে প্রেম। সেই প্রেমের খবর অফিসে রাষ্ট্র হতেই চাকরি চলে যায় যুগলের। মেয়েটির বাড়িতেও এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়।
মেয়েটির বাবার অবশ্য এই সমেয়ে পড়াশোনা শেষ করার আগেই বিয়ে করে ফেলুক। তাই দু-বছর পর মেয়ের বিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। এই সম্পর্কের কারণে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটলে, ব্রেকআপেরও পরমর্শ দেন। এই নিয়েই অশান্তি চলছিল পরিবারে। যার জেরে গত শনিবার বাড়ির অদূরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে, তার ছাদে উঠে আত্মহত্যা করেন দিব্যা।