হিজাব ইসলামী সংস্কৃতির অন্যতম নিদর্শন। মুসলিম নারীদের জন্য হিজাব পরিধান করাটা তাই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্য ধর্মের নারীরাও যখন হিজাব পরেন তখন যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। ফুটে উঠে ইসলামের সৌন্দর্য আর সুমহান আদর্শ। কাতার বিশ্বকাপে হচ্ছে এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা। অমুসলিমরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন হিজাবে।
সমকামিতা গুরুতর অপরাধ। ইসলাম ধর্মের এমন নিয়ম আর মূল্যবোধ রক্ষায় শুরু থেকে বদ্ধ পরিকর বিশ্বকাপ আয়োজক কাতার। তাতেই আঁতে ঘা লেগেছে পশ্চিমাদের। শুরু হয়ে যায় সমালোচনা। বিশ্বকাপ বয়কটের ডাকও এসেছে বহু দেশ থেকে।
অথচ কথা ছিল কাতারের ইতিহাস, ঐহিত্য আর সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখানোর। সেটা করেনি সমালোচকরা। তবে কাতারও কেন চাপিয়ে দিতে চাইছে সবকিছু? এ ব্যাপারটাও অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। চাপিয়ে না দিয়েও যে তুলে ধরা যায় ইসলামের সৌন্দর্য।
এই চিত্র যেন তারই প্রমাণ। কাতারে আসা অন্য ধর্মের নারীদের মধ্যে তৈরী হচ্ছে হিজাব পরার আগ্রহ। দোহায় মুসলিম ভলান্টিয়াররা তাদের কাছে হিজাবের সৌন্দর্য তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে তা গ্রহণও করছেন আনন্দ নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়ে চারদিকে শুরু হয়ে যায় আলোচনা।
জীবনে প্রথমবার হিজাব পরার অভিজ্ঞতায় উছ্বাস দেখা গেছে অনেকের মাঝে। ভলান্টিয়ারদের একজন জানিয়েছেন, ইসলামি কালচারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখতে পাচ্ছেন তারা। হিজাব পরতে চাওয়া নারীদের সংখ্যাও দিনদিন বাড়ছে।
এর আগে বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার পবিত্র কোরআন পাঠ করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। মার্কিন অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যান ও কাতারি তরুণ গানিম আল মিফতাহের সংলাপের মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে দেয়া হয় সম্প্রীতির বার্তা।
শুধু তাই নয় আরব ঐহিত্য ও ইসলাম প্রচারের অংশ হিসাবে বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন বইপত্র। আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম নামে ছয় ভাষায় একটা ই-বুক দেয়া হচ্ছে সমর্থকদের। কুরআন ও হাদিসের বাণী সম্বলিত দেয়ালচিত্রও দেখা যাচ্ছে কাতারের পথে পথে।
তবে ইসলাম কি জোর করে ধর্ম পালন করানোর পক্ষে? গ্যালারিতে দর্শকদের একজন ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন দেয়ায় তাকে বাধা দিয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীরা। ইরানে পুলিশি হেফাজতে নিহত মায়শা আমিনের একটা প্ল্যাকার্ড এনে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।
ইরানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। হিজাব বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধানও হয়েছে দেশটিতে। আন্দোলন করতে গিয়ে মারা গেছেন বহু নারী। সম্প্রতি হিজাববিহীন এক নারীকে ব্যাংকিং সেবা দেয়া ম্যানেজারকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
হিজাবের প্রতি অন্য ধর্মের নারীদের আগ্রহ যেমন দিচ্ছে ইতিবাচক বার্তা, অন্যদিকে বাধ্য করা নিয়েও চলছে সমালোচনা।