সময়ের হিসেবে বাকি বছর দেড়েকের বেশি। তবুও মরুর বুকে যেন আলোকচ্ছটা। উদ্ভাসিত চারপাশ। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’কে বরণ করে নিতে অপেক্ষায় তাবদ দুনিয়া। আগ্রহের কেন্দ্রে কাতারের শৈল্পিক স্টেডিয়ামগুলো।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম কোনো দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের আয়োজক হচ্ছে কাতার। খেলা হবে দেশটির ৫ শহরের ৮টি নান্দনিক স্টেডিয়ামে। তবে দৃষ্টির পুরোটাই থাকবে ফাইনালের ভেন্যু লুসাইল আইকনিকের দিকে। ৮০ হাজার ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট স্টেডিয়ামের প্রতিটি প্রান্তেই, যেন শিল্পীর তুলির নিখুঁত ছোঁয়া। জলের প্রতিবিম্বাকৃতি আর স্যাডল-ফর্মের ছাদের এই নির্মাণশৈলীকে ওপর থেকে দেখলে মনে হবে ভাসমান মাঠ। মাঠে প্রবেশে দর্শকদের বিশেষ সেতু পার হতে হবে। চারপাশে থাকবে কৃত্রিম পানির ফোয়ারা। পুরো স্টেডিয়াম চালিত হবে নিজস্ব সৌরশক্তি দিয়ে। পাশাপাশি স্টেডিয়ামের ওপরে থাকবে কাচের বিশেষ আবরণ।
নান্দনিকতায় লুসাইলের সঙ্গে সমানভাবে টেক্কা দিতে পারে আল বায়েত স্টেডিয়াম, যার পুরোটাই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। শুধু তাই নয়, এই স্টেডিয়ামের মধ্যেই রয়েছে বিলাসবহুল একাধিক হোটেল। যার ব্যালকনি দাঁড়িয়ে কফি খেতে খেতে আপনিও উপভোগ করতে পারেন ২১ নভেম্বরের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচও।
দোহার রাস আবু আবোদ স্টেডিয়ামটির নির্মাণকাজ শেষ হবে চলতি বছরেই। যার ধারণক্ষমতা হবে ৪০ হাজার। স্টেডিয়ামের দু'পাশেই থাকবে কৃত্রিম লেক। যেখানে ফুটবল বিশ্বকাপের পর অন্য খেলাগুলোর জন্যও আবু আবোদ স্টেডিয়ামে থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা।
মরুর বুকে যেন এক ফুটন্ত পদ্ম। যেন পুরুষের টুপিরই অবয়ব। নির্মাণকাজ শেষ হলে ঠিক এমনভাবেই আপনার চোখে ধরা দেবে দোহা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আল থুম্মা স্টেডিয়ামটি। আশ্চর্যের এখানেই শেষ নয়। আল থুম্মা স্টেডিয়ামের জন্য মরুভূমিতেই পুরো একটা শহর গড়ে তুলছে কাতার সরকার।
বিশ্বকাপের একমাত্র সবুজ স্টেডিয়ামের তকমা পেয়েছে আল রায়ান শহরের এডুকেশন সিটি। যেখানে হবে কোয়ার্টার ফাইনালের সব ম্যাচ। ইতোমধ্যে উদ্বোধন হওয়া স্টেডিয়ামটি খরচের হিসেবে কাতারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্টেডিয়াম। আর ভৌগোলিকভাবে বাহরাইন থেকে মাত্র ৫১ মিনিট দূরের পথ হওয়ায়, এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম পাচ্ছে বাড়তি গুরুত্ব।
কোন থ্রিডি অ্যানিমেটেড দৃশ্য নয়। এটা আহমদে বিন আলি স্টেডিয়াম। যেন একখণ্ড নীল চাঁদের ফলি। স্টেডিয়ামের ওপরের ফাঁকা স্থানটি চাইলেই ঢেকে ফেলা যাবে বিশেষ কাচে। বসার চেয়ারগুলোকে মোশন করা যাবে ইচ্ছেমতো। পুরো স্টেডিয়ামের আলোকসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ বাতি। এর ধারণক্ষমতা প্রায় ৪৫ হাজার।
খলিফা স্টেডিয়ামটি কাতারের জাতীয় স্টেডিয়াম। যার প্রতিষ্ঠা ১৯৭৬ সালে। তবে বিশ্বকাপ উপলক্ষে আমূল পরিবর্তন আর সংস্কার করা হয়েছে এই স্টেডিয়ামটির। আসনের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজারের মতো।
বিশ্বকাপের জন্য পুরোপুরি বদলে গেছে আল ওয়াকরা স্টেডিয়ামটি। নাম পরিবর্তন করে যার রাখা হয়েছে আল জানব। দোহার ঐতিহ্যবাহী নৌকার আকৃতিতে বানানো এই স্টেডিয়ামটি বিশেষ আলোচনায় এসেছে তার বিশাল আয়তনের জন্য। শুধু তাই ৪০ হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়ামটির পার্কিংয়ে একসঙ্গে ৫০ হাজার গাড়ি পার্ক করা যাবে।