প্রকাশিত: ০৭/০৪/২০২১ ১:২১ পিএম

ড. শায়খ আবদুর রহমান আল-সুদাইস। হৃদয়গ্রাহী সুর ও মধুমাখা কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াতের জন্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তিনি প্রায় চার দশক ধরে মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম ও কাবা শরিফের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রোববার (৪ এপ্রিল, মোতাবেক ২২ শাবান) কাবা শরিফের ইমাম হিসেবে তার ৩৮ বছর পূর্ণ হয়েছে।

শায়খ আবদুর রহমান সুদাইস ২২ বছর বয়সে ১৪০৪ হিজরি মোতাবেক ১৯৮৪ সালে মসজিদ আল হারামের খতিব ও ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি মসজিদটির প্রধান ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ ফাহাদ ইবনে আবদুল আজিজ এক রাজকীয় ফরমান জারি করে তাকে নিযুক্ত করেন।

প্রশাসনিক কাজে শায়খ সুদাইস।
১৪০৪ হিজরির ২২ শাবান মোতাবেক ১৯৮৪ সালের মে মাসে তিনি আসরের নামাজের ইমামতির মাধ্যমে তিনি পবিত্র কাবার ইমাম হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। তবে তার স্মৃতিবিজড়িত প্রথম সালাতের রেকর্ড করা হয়নি। মসজিদ আল হারামে তার নিয়োগের প্রায় দুই মাস পর থেকে তাঁর সালাতের রেকর্ড হতে থাকে— যা এখনো চলমান রয়েছে।

১৪৩৩ হিজরি মোতাবেক মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান হিসেবে ২০১৪ সালে তিনি মসজিদে নববিতে প্রথমবার ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন।

শায়খ সুদাইসের জীবন-তথ্য
তার পূর্ণ নাম আবদুর রহমান ইবনে আবদুল আজিজ আল-সুদাইস। জন্ম ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬০। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে। ‘আনাজ কালন’ নামক আরব উপজাতি সম্প্রদায়ের সন্তান তিনি। বাবার নাম আবদুল আজিজ। মায়ের নাম ফাহদা রউফ।

শৈশব থেকেই তিনি চারিত্রিক নিষ্কুলুষতার কারণে প্রসিদ্ধ। যা তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাতে দারুণ সহযোগিতা করেছে। ১২ বছর বয়সেই তিনি পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেন।

বর্তমানে তিনি মুসলিম উম্মাহর দুই পবিত্রতম স্থান মসজিদ আল-হারাম (কাবা শরিফ) ও মসজিদে নববি’র (মদিনা) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো। যা মানুষের জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালনায় প্রভাব রাখবে-

১৯৭৯ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন স্নাতক সমমান ডিগ্রি। ১৯৮৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি ‘ইসলামি শরিয়াহ’ বিষয়ে (পিএইচডি) ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন ও কাবাঘরের ইমামতি
পড়াশোনা শেষে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এভাবেই তার কর্মজীবনের শুরু। তারপর উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন।

১৯৮৪ সালে তিনি কাবা শরিফের ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন। একই বছর জুলাই মাসে পবিত্র কাবা শরিফে প্রথম জুমার খুতবা দেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৪ বছর।


সেরা ইসলামিক ব্যক্তিত্ব নির্বাচন
শায়খ সুদাইস ২০০৫ সালে বছরের সেরা ইসলামিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে ‘ইসলামিক পারসনালিটি অব দ্য ইয়ার’ (Islamic Personality Of the Year) নির্বাচিত হন। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ ও বোমা হামলা বিষয়ে তিনি ইসলামবিদ্বেষীদের ভুল ধারণা নিরসন করেন। পাশাপাশি ইসলামের শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।

মক্কা-মদিনার দায়িত্ব ও মন্ত্রীর পদমর্যাদা
মন্ত্রীর পদমর্যাদায় মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদের প্রেসিডেন্সি প্রধান হিসেবে তিনি ২০১২ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত, শায়খ সুদাইসি বিশ্বাস করেন, তার মায়ের দোয়ায় তিনি কাবাঘরের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা তার মায়ের সেই দোয়া কবুল করেছেন। ছোট বেলায় তার মা আদরমাখা খানিক রাগে এই দোয়া করেছিলেন যে, যাও, আল্লাহ তোমাকে হারামাইনের ইমাম বানিয়ে দিন।’

হৃদয় উজাড় করে দোয়া করছেন তিনি।
আল্লাহ তাআলা তাকে কল্যাণময় দীর্ঘ হায়াত দান করুন। তার মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলমানদের উপকৃত করুন।

পাঠকের মতামত

দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রাখাইন, নতুন আশ্রয়প্রার্থীর আশঙ্কায় বাংলাদেশ

নজিরবিহীন সংকটে পড়তে যাচ্ছে প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির সম্ভাবনা না থাকায় ...