ঢাকাটাইমস :
আব্দুর রহমান বদির নাম শোনেননি, দেশে এমন মানুষ পাওয়া যাবে কমই। নানা কারণে আলোচিত ব্যক্তি এই বদি। তিনি ছিলেন কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তবে বদি সবচেয়ে বেশি আলোচিত মাদক ব্যবসার কারণে। তাকে বলা হয়, ইয়াবার গডফাদার। তাই অনেকের কাছেই বদি পরিচিত ইয়াবা ডন হিসেবে।
মাদকের এই গডফাদার ছিলেন রাজকীয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কিন্তু একসময় বদলে যায় তা জীবনযাপন। আয়েশি জীবনের বদলে এখন তিনি দিন কাটাচ্ছেন নির্জন কারাগারের মেঝেতে শুয়ে বসে। আবেদন করেও মেলেনি ডিভিশন। তাই কয়েদখানায় বেশ কষ্টেই দিন কাটছে আব্দুর রহমান বদির।
মাদক ব্যবসা ছাড়াও আওয়ামী লীগ আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বদি হয়ে ওঠেন ইয়াবা কারবারের আন্তর্জাতিক চক্রের ডন। আর অবৈধ আয় করে তিনি বনে যান বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক।
এক সময়কার টেকনাফ পৌরসভার চেয়ারম্যান বদি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হয়েছিলেন টানা দুই দফায়। কিন্তু মাদক ব্যবসার কাহিনী সামনে এসে পড়ায় ২০১৮ সালে নৌকার মনোনয়ন পাননি বদি। তবে তার স্ত্রী ওই আসন থেকে এমপি হওয়ায় ক্ষমতার মসনদে থেকেই যান বদি।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। এরপর কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত, আওয়ামী লীগের নেতকর্মীদের গণপলায়ন শুরু হয়। গা ঢাকা দেন আব্দুর রহমান বদিও। কিন্তু বেশিদিন আড়ালে থাকতে পারেননি। গত ২০ আগস্ট চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থেকে বদিকে ধরে ফেলে র্যাব। এরপর থেকে কারাগারেই দিন কাটাচ্ছেন এই মাফিয়া।
কারাসূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রহমান বদি এখন কারাগারের ছোট্ট সেলে শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন। মেঝেতে বিছানা পেতে ঘুমাচ্ছেন তিনি। খেতে হচ্ছে সাধারণ কয়েদিদের জন্য বরাদ্দ খাবার। গ্রেপ্তারের পর প্রথমে কক্সবাজার, সেখান থেকে চট্টগ্রাম এবং সবশেষ তাকে নেওয়া হয়েছে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে।
কক্সবাজার কারাগারে থাকার সময় সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে ডিভিশন সুবিধা পেয়েছিলেন বদি। নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি গেজেটেড অফিসাররা কারাগারে ডিভিশন পেয়ে থাকেন। অন্যরা বিশেষ করে যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি বা এমপি-মন্ত্রী, তারা আবেদন করলে, অথবা এ বিষয়ে আদালত নির্দেশনা দিলে ডিভিশনের ব্যবস্থা করা হয়।
আর যাদের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা থাকবে না, তারা যদি আবেদন করেন, তখন সেই আবেদনটি সংশ্লিষ্ট ডিসির কাছে পাঠানো হয়। সেখান থেকে অনুমতি মিললে পাওয়া যায় ডিভিশন সুবিধা।
আর ডিভিশন সুবিধা পেলে কারাগারে একটি বেড, চেয়ার-টেবিল, পত্রিকা, ফ্যান সুবিধা পেয়ে থাকেন বন্দীরা। নিজে থেকে টাকা দিলে বিটিভি দেখার সুবিধা পান। পাশাপাশি খাবারের মেন্যুটা অন্য বন্দীদের থেকে আলাদা হয়। তবে যারা ডিভিশন সুবিধার বাইরে থাকেন, তাদের ঘুমানোর জন্য মেঝেতে বিছানা পেতে দেয়া হয়।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের একজন কর্মকর্তা বলেন, “এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আমাদের কাছে রয়েছেন বদি। গাজীপুর জেলা প্রশাসক অনুমতি দিলে তাকে জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশন সুবিধা দেওয়া হবে