লন্ডন: কারাগারে অধিক খাবার পাওয়ার জন্য ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের মার্লবরোর ডিউক জেমি স্পেন্সার চার্চিল।
মাদকগ্রহণ ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য অতীতে মার্লবরোর ১২তম ডিউকজেমি স্পেন্সার চার্চিলকে জেলখানায় পাঠানো হয়েছিল।
জেলখানায় তিনি কেন ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, কারাগারে যাতে তিনি পরিমাণে বেশি ও ভাল খাদ্য পেতে পারেন সেজন্য তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি জানান, সৌভাগ্যক্রমে তখন কেবলই মুসলিমদের রমজান মাস শেষ হয়েছিল। রমজান শেষ হওয়ার পরপরই তিনি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন যে তিনি তার ধর্মীয় বিশ্বাস পরিবর্তন করেছেন।
একজন পুলিশ অফিসারকে ঘুষি মারাসহ তার বিরুদ্ধে কোকেন এবং হেরোইন গ্রহণের অসংখ্য অভিযোগ ছিল।
তার প্রয়াত বাবা জন স্পেন্সার-চার্চিল তার অপরাধী পুত্রকে তার ৩৬ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে এক ব্যর্থ আইনি লড়াই চালিয়েছিলেন। এই উত্তরাধিকার সম্পদের মধ্য অক্সফোর্ডশায়ারের ব্লেনহেইম প্রাসাদও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
লন্ডনে চীনা বিনিময় ফোরামের ‘ব্যতিক্রমী মানুষদের অসাধারণ জীবন-যাপন’ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনায় ডিউক জেমি স্পেন্সার চার্চিল তার এসব অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন।
ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি যখন কারাগারে গিয়েছিলাম তখন আমি আমার ধর্ম পরিবর্তন করি। আমি একজন মুসলিম হয়েছিলাম কারণ এজন্য আমি অধিক খাবার পেতাম। তখন কেবলই রমজান মাস শেষ হয়েছে। আমি সৌভাগ্যবশত ঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছি!’
সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কয়েদীই বিশ্বাস করেন যে তারা যদি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন তবে, তারা আরো ভাল খাবার খেতে পারবে।
২০১০ সালে প্রকাশিত ‘মুসলিম প্রিজনার্স’ নামে এক নিবন্ধে বলা হয়, কয়েদীরা মনে করেন মুসলিম হলে ভাল খাবার ছাড়াও তারা অন্যান্য আরো সুবিধা পাবেন। এরমধ্য রয়েছে তারা তাদের সেল থেকে অন্যদের তুলনায় বেশি বেরিয়ে আসতে পারবে।
তবে, দেশটির বিচার মন্ত্রণালয় এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কয়েদীদের মধ্যে যারা ইসলামে ধর্মান্তরিত তাদেরকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেয়া হয় না। ভালো খাদ্য পাওয়াসহ অন্যান্য অভিযোগ মিথ্যা।
এতে বলা হয়, একজন বন্দী তার ধর্ম অনুযায়ী হালাল খাবার পছন্দ করতে পারেন।
ডিউক ৩০ বছর আগে জেল থেকে মুক্তি পান। তিনি জানান, সেই দিনগুলো অতীত হয়ে গেছে এবং ১০ বছর আগে তিনি ড্রাগ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না আমার মস্তিষ্কে কিংবা আমার স্ত্রীর মধ্যে কিছু ছিল কি না। কিন্তু সেই সময় আমি কেবল অনুভব করতাম যথেষ্ট হয়েছে।’
তার বাবা জন ছিলেন মার্লবরোর ১১তম ডিউক। পরিবারের সম্পত্তিতে তার পুত্রের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে তিনি ১৯৯৪ সালে একটি ব্যর্থ আইনি যুদ্ধ চালান।
সূত্র: ইন্ডিপেন্ডেন্ট